বর্তমানে বিশ্ব বাজারে অশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেল পিছু ৭২ ডলার করে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় যে দাম ১০০ ডলারের গণ্ডি ছড়িয়ে আরও বহু দূর চলে গিয়েছিল। তবে বর্তমানে বিশ্ববাজারে তেলের দাম সস্তা হলেও ভারতে তা অপরিবর্তিত। কলকাতাতেই এখন পেট্রোলের দাম ১০৪.৯৫ টাকা। এরই মাঝে বারবার প্রশ্ন উঠেছে বিশ্ববাজরে দাম কম থাকলে কেন ভারতে কমছে না জ্বালানি তেলের দাম। এই আবহে বিজেপি বিরোধী দলগুলির শাসনে থাকা রাজ্যের ঘাড়েই দোষ চাপায় কেন্দ্রীয় সরকার। আর সম্প্রতি জ্বালানি মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীকে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও তিনি জিএসটি সংক্রান্ত সেই আগের যুক্তি খাড়া করেন। (আরও পড়ুন: 🤪কেন্দ্রের অনুমতি পেল রিলায়েন্স, এবার বদলে যাবে ভারতে ক্রিকেট দেখার অভিজ্ঞতা?)
আরও পড়ুন: ﷺবেতন বাড়ল কয়েক হাজার, পুজোর মুখে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের পকেট ভরাল মমতার সরকার
হরদীপ সিং পুরীর বক্তব্য, 'পেট্রল, ডিজ়েলকে জিএসটি আনার প্রস্তাব রয়েছে। আমি নিজেও অনেক দিন ধরে সেই সওয়াল করেছি। অর্থমন্ত্রীও বহুবার সে কথা বলেছেন। এলাহাবাদের বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। কিন্তু এই কথা তো সবাই জানে যে, সব পক্ষের মতৈক্যের ভিত্তিতেই জিএসটি পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে এবং রাজ্যগুলির অর্থমন্ত্রীদেরও সে জন্য একমত হতে হবে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি ভ্যাট মানুষকে স্বস্তি দিয়েছে। তবে বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি বাড়তি ভ্যাট কমাচ্ছে না। ফলে মতৈক্য তৈরি হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে।' এই আবহে সব রাজ্যের কাছেই হরদীপ আবেদন করেন, জ্বালানিকে যাতে জিএসটির আওতায় আনার বিষয়ে তারা মত দেন। (আরও পড়ুন: 💃রবিবাসরীয় বাজার মাতাবে পদ্মার ইলিশ, আরও রুপোলি শস্য এল ভারতে, দাম কত জানেন?)
আরও পড়ুন: 🧸পুজোর আগে বাড়ল কর্মীদের বেতন, সরকারি তালিকা ধরে জানুন কাদের পকেটে ঢুকবে কত
এদিকে জিএসটি ইস্যুতে তেলের দাম নিয়ে কেন্দ্রের তরফ থেকে রাজ্যগুলির ঘাড়ে বন্দুক রাখা হলেও হিসেব বলছে, রাশিয়া থেকে তেল কিনে ভারতের বিপুল লাভ হয়েছে। এই আবহে অনেকেই আশা করেছিল, ভারতে তেলের দাম কমবে। উল্লেখ্য, ইউক্রেনের ওপর রাশিয়া হামলা চালাতেই কড়া পদক্ষেপ করেছিল আমেরিকা। রুশ জ্বালানি তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তারা। তবে আন্তর্জাতিক ভাবে এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি। এই আবহে ভারত রাশিয়ার থেকে তেল কিনতে থাকে। কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক ভাবে ভারতের ওপর বিভিন্ন জায়গা থেকে চাপ আসতে থাকে। রাশিয়া থেকে তেল কিনতে বারণ করা হয়েছিল দিল্লিকে। তবে ভারত নিজের অবস্থানে অনড় থেকেছিল। (আরও পড়ুন: ♓বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, উৎসবের মরশুমে বাড়ছে ন্যূনতম বেতন, ডিএ বৃদ্ধি ৩.২%)
আরও পড়ুন: 🍨পুজোর আগে বড় সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের, চাল রফতানির ওপর থেকে উঠল নিষেধাজ্ঞা
♍ ক্রমেই রাশিয়া থেকে আমদানি করা জ্বালানি তেলের পরিমাণ বাড়তে থাকে। রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই রাশিয়ান অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ভারতে পরিশোধিত হয়ে আমেরিকা বা ইউরোপের বন্দরে গিয়ে পৌঁছত। এছাড়া ওপেকভুক্ত দেশগুলির থেকে রাশিয়ার তেলের দাম অনেকটাই কম ছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারত ১৫৭.৫ বিলিয়ন ডলারের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কিনেছিল রাশিয়া থেকে। আর ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে সেই পরিমাণ কিছুটা কমে যায়। তা সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে ভারত গত অর্থবর্ষে ১৩২.৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছে বলে জানা গিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ২৩২.৭ মিলিয়ন মেট্রিক টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছিল। আর ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে সেই পিমাণটা ছিল ২৩২.৫ মেট্রিক টন। অর্থাৎ, গত অর্থবর্ষে ভারত আরও সস্তায় জ্বালানি তেল কিনতে সক্ষম হয়েছিল রাশিয়ার থেকে। এর ফলে ভারত ১৬ শতাংশ টাকা বাঁচাতে সক্ষম হয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ৮২.৫৮ প্রতি ব্যারেল গড়ে অশোধিত জ্বালানি তেল কেনে। গত অর্থবর্ষে তা ছিল ৯৩.১৫ ডলার। ভারত ওমান, দুবাই, ব্রেন্ট কিনে থাকে। পাশাপাশি রাশিয়ার থেকেও জ্বালানি তেল কিনে থাকে ভারত। এই আবহে রাশিয়ার থেকে জ্বালানি তেল কেনার জন্য ভারত প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার বাঁচাতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে।