জুনে ভারতের সামান্য কমল খুচরো মুদ্রাস্ফীতির হার। চলতি বছরের মে'তে যেখানে মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৬.৩ শতাংশ, জুনে তা ঠেকেছে ৬.২৬ শতাংশ। জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের তথ্যে এমনই দাবি করা হয়েছে। তারইমধ্যে কেন্দ্রের দাবি, মে'তে দেশে উৎপাদনের হার ২৯.৩ শতাংশ বেড়েছে। গত কয়েক মাসে দেশে লাগাতার বাড়ছে খাদ্যদ্রব্য, জ্বালানির দাম। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে লিটারপিছু পেট্রল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ফেলেছে। ডিজেলের দামও নেহাত কম পড়ছে না। জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ১২.৭ শতাংশ। বেড়েছে পরিবহনের খরচ। তার প্রভাব পড়েছে খুচরো বাজারে। ভোজ্য তেল, ডিম, ডাল-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম আকাশছোঁয়া হয়েছে। খাদ্যদ্রব্যে মুদ্রাস্ফীতি সামান্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫.১৫ শতাংশ। তার জেরে পকেটে টান পড়েছে মধ্যবিত্তের পকেটে। সম্প্রতি অবশ্য কর ছাড়ের কারণে কিছুটা কমেছে ভোজ্য তেলের দাম। কিন্তু তাও আগের থেকে ঢের বেশি আছে দাম। সেই পরিসংখ্যানই কেন্দ্রের মুদ্রাস্ফীতির পরিসংখ্যানে ধরা পড়েছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, ঊর্ধ্বমুখী জ্বালানির দর এবং উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির জেরে কিছু সময়ের জন্য মুদ্রাস্ফীতির হার বেশি থাকবে।তাতেও অবশ্য জুনের মুদ্রাস্ফীতির পরিসংখ্যানে কিছুটা আশার আলো দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, মুদ্রাস্ফীতির হার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (আরবিআই) নির্ধারিত ঊর্ধ্বসীমার উপরে ছিল। কিন্তু সেই চাপ কিছুটা কমছে বলে মনে হচ্ছে। এমনিতে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া সীমার থেকে টানা দু'মাস বেশি থেকেছে মুদ্রাস্ফীতির হার। কেন্দ্রকে মুদ্রাস্ফীতির হার চার শতাংশে (দুই শতাংশ বৃদ্ধি বা হ্রাস ধরে) বেঁধের রাখার পরামর্শ দিয়েছিল আরবিআই। কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের অর্থনীতি উপাসনা ভরদ্বাজকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা রয়টার্স বলেছেন, ‘যখন আর্থিক বৃদ্ধিকে ঘুরে দাঁড় করানোর উপযুক্ত অবস্থান প্রয়োজন, তখন প্রত্যাশার থেকে কম মুদ্রাস্ফীতি বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছুটা স্বস্তি বয়ে এনেছে।’ তারইমধ্যে জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে দেশে উৎপাদনের হার ২৯.৩ শতাংশ বেড়েছে। তাতেও অবশ্য করোনাভাইরাস মহামারীর আছড়ে পড়ার আগে স্তরে পৌঁছাতে পারেনি। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ভিত্তি কম ধরা হওয়ায় এবং উৎপাদন ক্ষেত্রে ভালো কাজের সুবাদে সেই বৃদ্ধি হয়েছে। মে'তে ২৩.৩ শতাংশ বৃদ্ধির সাক্ষী থেকেছে খনন ক্ষেত্র। ৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে শক্তি ক্ষেত্রে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, যে পরিসংখ্যান হাতে এসেছে, তা থেকে বোঝা যাচ্ছে করোনার দ্বিতীয় স্রোতের ধাক্কা রুখতে কিছুটা সক্ষম হয়েছে।