ইতিমধ্যেই উত্তেজিত বিশ্ব। সংঘাতের আশঙ্কা বাড়ছে। কারণ, উত্তর কোরিয়া সফরে গিয়ে কিম জং উনের সঙ্গে ঐতিহাসিক চুক্তি করে ফিরেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই চুক্তির আওতায়, যুদ্ধ হলে উভয় দেশ একে অপরকে তৎক্ষণাৎ সামরিক সহায়তা পাঠাবে। উত্তর কোরিয়ার সরকারি গণমাধ্যম নিশ্চিত করেছে যে, গত বুধবার অর্থাৎ ১৯ জুন উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনে দুই দেশ ব্যাপক কৌশলগত চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছে। ন্যাটোর প্রধান বলেছেন, উত্🥀তর কোরিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার এই নতুন প্রতিরক্ষামূলক চুক্তি কর্তৃত্ববাদী শক্তিরﷺ মধ্যে ক্রমবর্ধমান সারিবদ্ধতা দেখিয়েছে।
কী কী নির্ধারিত হয়েছে চুক্তিতে
ঠাণ্ডা যুদ্ধের অবসানের পর রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি। কারণ রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে এই চুক্তির চার নম্বর ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনও একটি দেশ আক্রমণ করলে বা যুদ্ধাবস্থায় থাকলে অন্য দেশ সেই দেশকে তখনই সামরিক ও অন্যান্য সহায়তা পাঠাবে। দুই দেশের নিরাপত্তা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, সংস্কৃতি এবং মানবিক সহায়তার দিকগুলোর দিকে তাকিয়ে, রাশ𝄹িয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন চুক্তিটিকে দুই দেশের সম্পর্কে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
সোভিয়েত ইউনিয়নের সময়ও দুই দেশের মধ্যে অনুরূপ চুক্তি হয়েছিল
উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালেﷺ উত্তর কোরিয়া ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে অনুরূপ একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সে ক্ষেত্রেও একটি দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ক্ষেত্রে, অন্য দে🧜শকে তাৎক্ষণিক সামরিক সহায়তা দেওয়ার কথা ছিল। এরপর, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হলে, এই চুক্তি শেষ হয়ে গিয়েছিল। এর জায়গায় ২০০০ সালে একটি নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল দুই দেশ। যদিও সেই চুক্তিতে সামরিক সাহায্যের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়নি।
শীর্ষ সম্মেলন ডেকেছে ন্যাটো
এ প্রসঙ্গে ন্যাটো সেক্রেটারি জেনারেল জেনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন যে উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে প্রচুর পরিমাণে গোলাবারুদ সরবরাহ করেছে। যখন চিন এবং ইরান উভয়ই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মস্কোকে 🍃সামরিকভাবে সমর্থন করেছে। তাঁর দাবি, আমাদের সচেতন হওয়া দরকার যে কর্তৃত্ববাদী শক্তিগুলি আরও বেশি করে সারিবদ্ধ হচ্ছে। তারা একে অপরকে এমনভাবে সমর্থন করছে যা আমরা আগে দেখিনি। তিনি একতার আহবান জানিয়ে বলেছেন, রাশিয়া এবং অন্যান্য এশীয় দেশগুলির মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতার অর্থ হল এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ন্যাটোর মিত্রদের সঙ্গে কাজ করা আরও গুরুত্বপূর্ণ। এই কারণেই অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ কোরিয়ার নেতাদের আগামী মাসেএ ওয়াশিংটনে ন্যাটো শ♔ীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আর্থিক ভারসাম্য নিয়ে উদ্বিগ্ন ন্যাটো
স্টলটেনবার্গ꧑ আরও বলেছিলেন যে তিনি আশা করেছিলেন কানাডা প্রতিরক্ষা খাতে মোট দেশীয় পণ্যের ২ শতাংশ ব্যয় করার ন্যাটো লক্ষ্য পূরণ করবে। কানাডার লিবারেল সরকার, সামাজিক কর্মসূচিতে বিলিয়ন বিলিয়ন ঢেলে দিয়েছে, কিন্তু তাঁর সামরিক খাতে জিডিপির মাত্র ১.৩৭ শতাংশ ব্যয় করেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এই খরচ ১.৭৬ শতাংশে পৌঁছোনোর একটি পরিকল্পনা জারি করেছে। স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, অন্যান্য ন্যাটো সদস্যরাও আর্থিক ভারসাম্য নিয়ে উদ্বিগ্ন, তাঁরা স্বাস্থ্য (এবং) শিক্ষার জন্য অর্থ ব্যয় করতে চায়। তাঁর আরও দাবি, আমরা যদি শান্তি রক্ষা করতে না পারি, তাহলে আমরা স্বাস্থ্য এবং জলবায়ু পরিবর্তন এবং শিক্ষা নিয়ে কী করব? সবই তো অকৃতকার্য হবে।
উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্ক তলানিতে
রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সামরিক চুক্তির বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হননি। উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া🉐র মধ্যে কিন্তু এখন উত্তেজনা চরমে। কিম জং উন ক্রমাগত তাঁর পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন। দক্ষিণ কোরিয়াও আমেরিকা ও জাপানের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার উপর এভাবেই চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে দেশগুলো।