ইউক্রেন যুদ্ধে প্রযুক্তির অভাবনীয় প্রয়োগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ স্যাটেলাইট, ড্রোন থেকে শুরু করে নানা উন্নত অস্ত্র ও সরঞ্জাম সৈন্যদের আক্রমণকে প্রতিহত করতে সাহায্য করছে৷ এক জার্মান কোম্পানি সে ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে৷ এক ধরনের ড্রোন ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে৷ সম্ভাব্য রুশ হামলা শনাক্ত করাই সেগুলির কাজ৷ জার্মানির দক্ষিণে কোয়ান্টাম সিস্টেমস নামের এক হাইটেক কোম্পানি এই ড্রোন তৈরি করেছে৷ কোম্পানির কর্ণধার ন🌠িজে সামরিক বাহিনীতে সক্রিয় ছিলেন৷ এখন তিনি রিকনোসেন্স অপারেশনের জন্য ড্রোন তৈরি করেন৷ কোম্পানির কর্ণধার ফ্লোরিয়ান সাইবেল বলেন, ‘এই মুহূর্তে সব মিলিয়ে আমাদের দেড়শো ইউনিট মোতায়েন রয়েছে৷ আমরা আরও পাঠানোর পরিকল্পনা করছি৷ যতদিন এই যুদ্ধ চলবে, ততদিন আমরা সাহায্য করতে চাই৷'
এমন ড্রোন ইতিমধ্যেই ইউক্রেনে ব্যবহার করা হচ্ছে৷ সে দেশের সরকার চলতি বছরে আরও অনেক ড্রোন অর্ডার দিয়েছে৷ প্রত্যেকটির দাম এক লাখ আশি হাজার ইউরো৷ জার্মান সরকার দুই কোটি ইউরো অনুদান হিসেবে বরাদ্দ করেছে৷ ড্রোনগুলি উড়তে ও নামতে পারে৷ উইংস্প্যান দুই দশমিক আট শূন্য মিটার৷ ৩🐲০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরে যেতে পারে সেগুলি৷ শুধু নিরীক্ষণের জন্য সেগুলি ব্যবহার করা যায়৷ থার্মাল ইমেজিং-এর মাধ্যমে ত্রিমাত্রিক মানচিত্রে ড্রোন লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করে৷ তবে বোমা ফেলতে পারে না৷ ফ্লোরিয়ান সাইবেল বলেন, ‘ড্রোন আকাশে ঘুরে ট্যাংক বা কামানের অবস্থানের মতো সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তুর সন্ধান করে৷ অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য অপারেটারের কাছে পাঠিয়ে দেয়, যে সেগুলি ঊর্দ্꧂ধতন সামরিক কমান্ডের কাছে হস্তান্তর করে৷ সেই কমান্ড ইউক্রেনের আর্টিলারির কাছে শত্রুর অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য পাঠায়৷ অর্থাৎ আমরা সেন্সর হিসেবে টার্গেট ডেটা পাঠাই, আর্টিলারি ইউনিট তার ভিত্তিতে হামলা চালায়৷'
ড্রোনের কাজ শেষ হলে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে শত্রুপক্ষের অবস্থান জানানো হয়৷ আকাশে এমন হাইটেক প্রযুক্তির নজরদারির মুখে রাশিয়ার বাহিনী বিশেষ কিছু করতে পারে না৷ অক্ষত টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও জিপিএস সংক্রান্ত তথ্য থাকলে তবেই জমির উপর যোগাযোগ সম্ভব৷ কিন্তু ২০২২ সালে রুশ বꦛাহিনী হামলা শুরু করে বোমারু বিম🥂ান ও হ্যাকারদের তাণ্ডবের মাধ্যমে ইউক্রেনের টেলিকম নেটওয়ার্ক কার্যত ধ্বংস করে দিয়েছিল৷
আজকাল আকাশে আমেরিকার বেসরকারি স্টারলিংক কোম্পানির স্যাটেলাইট বিচরণ করছে৷ আধুনিক যুদ্ধ চালিয়ে যেতে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর কাছে সেটাই ছিল একমাত্র ভরসা৷ বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্যাটেলাইট🍃 নেটওয়ার্ক যোগাযোগ সম্ভব করেছে৷ সেই পরিষেবার𝕴 জন্য ইউক্রেনকে মাসুল দিতে হলেও পশ্চিমা বিশ্ব ও অন্যান্য সহযোগীরা তার জন্য অর্থ দিচ্ছে৷
আমেরিকান শিল্পপতি ইলন মাস্কের স্পেসএক্স কোম্পানি স্টারলিংকের মালিক৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, 🐽স্যাটেলাইট ও ড্রোনের মাধ্যমে চলমান এই যুদ্ধ ‘হাইব্রিড' সংঘাতের নতুন যুগের সূত্রপাত করছে৷ জার্মান সেনাবাহিনীর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রো. আন্দ্রেয়াস ক্নপ বলেন, ‘আমার মতে, মানুষ এখন অনেক দূরে বসে যুদ্ধক্ষেত্রের ঘটনার উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারছে৷ অনেকে সেই সব হলিউড চলচ্চিত্রের কথা জানেন, যাতে নেভাদা মরুভূমিতে বসে কিছু মানুষকে এমন ড্রোন নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেছে৷ আজ সত্যি সেটা বাস্তব হয়ে উ✤ঠেছে৷
বিভিন্ন কোম্পানির নানা ধরনের ড্রোন ইউক্রেন যুদ্ধে কাজে লাগানো হচ্ছে৷ তবে জার্মানি থেকে আনা এই ড্রোনের ফ্লিট সবচেয়ে বড়গুলির অন্যতম৷ জার্মানি আসন্ন গ্রীষ্মকালের মধ্যেই ইউক্রেনকে নজরদারি ড্রোন সরবরাহের কাজ শেষ করবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ বিশ্বܫের প্রথম হাইব্রিড ও হাইটেক যুদ্ধ অবসানের কোনও লক্ষণ এখনও দেখা যাচ্ছে না৷ নতুন ড্রোনগুলিও সেই বাস্তব পরিবর্তন করতে পারবে না৷