বারাণসীর একাধিক হিন্দু মন্দির থেকে সরিয়ে ফেলা হল সাইবাবার মূর্তি! ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার। সূত্রের খবর, এর নেপথ্যে রয়েছে 'সনাতন রক্ষক দল' নামে একটি হিন্দু গোষ্ঠী। তাদের তরফেই হিন্দু মন্দির থেকে সাইবাবার মূর্তি সরাতে বিশেষ অভিযান বা প্র🧜চার কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে!
সংশ্লিষ্ট একটি মন্দিরের প্রধান পুরোহিত রাম্মু গুরཧুর দাবি, 'প্রকৃত জ্ঞান ছাড়াই সাইবাবার পুজো করা হচ্ছিল। যা শাস্ত্র অনুসারে নিষিদ🐎্ধ।'
অন্যদিকে, অন্নপূর্ণা মন্দিরের প্রধান পুরোহিত শঙ্ক♌র পুরী বলেন, 'শাস্ত্রে সাইবাবার পুজো করা নিয়ে🐷 কোনও বিধান দেওয়া নেই।'
এরই মধ্যে অযোধ্যার হনুমান গঢ়ী মন্দিরের মহন্ত রাজু দাস সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে বলেন, 'সাই একজন ধর্মগুরু (ধর্মীয় নেতা ও প্রচারক) হতে পারেন, কিংবা একজন মহাপুরুষ (মহান মানব), একজন পীর অথবা একজন আউলিয়া হতে পারেন। কিন্তু, তিনি ভগবান বা ঈশ্বর হতে পারেন না। যিনি বারাণসীর বিভিন্ন মন্দির থেকে সাইবাবার মূর্তি সরিয়ে দিয়েছেন, আমি সেই ব্যক্তি কাছে কৃতজ্ঞ। আমি দেশের সমস্ত সনাতনীর কাছে অনুরোধ করব, তাঁরা যেন সমস্ত মন্দির থেকে চাঁদ পীরের (সাইবাবা) মূর্তি সরিয়ে 🔜দেন।'
সনাতন রক্ষক দলের রাজ্য সভাপতি অজয় শর্মা এই প্রসঙ্গে বলেন, 'কাশীতে (বারাণসী) কেবলম🅠াত্র দেবাদিদেব মহাদেবেরই পুজো করা উচিত।'
অজয়ের দাবি, ভক্তদের ভাবাবেগের মর্যাদা দিতে ইতিমধ্যেই ১০টি মন্দির থেকে সাইবাবার মূর্তি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আগামী দিনে অগস্ত্যকুণ্ড এবং ভূতেশ্বর মন্দির থেকেও সাইবাবার মূর্তি🌄 সরিয়ে দেওয়া হবে।
♏বারাণসীর সিগরা এলাকার সন্ত রঘুবর দাস নগরে অবস্থিত সাইবাবার মন্দিরের পুরোহিত সমর ঘোষ বলেন, 'যাঁরা আজ নিজেদের সনাতনী বলে দাবি করছেন, তাঁরাই একদিন সাইবাবাকে মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। আর এখন তাঁরাই সাইবাবাকে সেখান থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন। ঈশ্বর এক, তাঁর রূপ ভিন্ন হতে পারে। এই ধরনের আচরণ একেবারেই সঠিক নয়। ওঁরা মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করছেন এবং এর ফলে সমাজে বিভেদ ছড়াব🎃ে।'
সমর ঘোষ আরও জানান, প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সাইবাবার মন্দির খোলা থাকে। ভক্তরা রোজ মন্দিরে আসেন এবং পুজো দে🔜ন। তিনি বলেন, 'বিশেষ করে প্রতি বৃহস্পতিবার প্রায় চার থেকে পাঁচহাজার ভক্ত মন্দিরে আসেন সাইবাবার পুজো দিতে।'
বিবেক শ্রীবাস্তব নামে 🌳এক সাইভক্ত বলেন, যেভাবে সাইবাবার মূর্তি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেই ঘটনা অত্যন্ত বেদনার।
তিনি বলেন, 'এই ঘটনা লক্ষ লক্ষ সাইভক্তের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করবে। সব ঈশ্বরই আদতে এক। সকলেরই 🐷অধিকার রয়েছে, তাঁরা ঈশ্বরের যে রূপে বিশ্বাস করেন, সেই রূপের আরাধনা ও পুজো করার। সাইবাবা হিন্দু না মুসলিম, এই বিতর্ক এবং বিভাজন আমরাই তৈরি করেছি। ঈশ্বর মানুষে-মানুষে কোনও ভেদাভেদ করেননি।'
ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে কংগ্রেস। উত্তরপ্রদেশে দলের মুখপাত্র মণীশ হিন্ডভি বলেন, 'বিজেপি আর তাদের অনুগামীরা ধর্মকে রাজনীতির আখরায় পর্যবসিত করেছে। যা কখনই উচিত নয়। সনাতন ধর্ম এমন একটি ধর্মীয় আধার, যা সমস্ত ধর্মের ভালো দিকগুলিকে গ্রহণ করতে শেখায়। যদি কোনও ধর্মান্ধ ব্যক্তি মন্দির থেকে কোনও মূর্তি সরিয়ে দেন, 𓄧তাহলে তিনি মোটেও তা দেশের স্বার্থে করছেন না।'
ঘটনার প্রতিবাদে🍃 সরব হয়েছে সমাজবাদী পার্টিও। দলের মুখপাত্র সুনীল সিং সজন বলেন, 'বিজেপিই হল এই খেলার আসল খেলোয়াড়। তারা মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের সঙ্গে খেলা করছে। এবার তারা ঈশ্বরের মধ্যেও বিভেদ তৈরি করছে। বিভাজন এবং ঘৃণাই হল বিজেপির আসল চরিত্র। সাইবাবার কোটি কোটি ভক্ত রয়েছেন। সংবিধান যেখানে এই ধরনের বিভেদকে স্থান দেয় না, সেখান আমরা বিভাজন তৈরি করার কে?'