লখিমপুরের মামলায় 'ইচ্ছাকৃত ঢিলেমির' জন্য সুপ্রিম কোর্টে ভর্ৎসনার মুখে পড়ল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। পাশাপাশি সেই 'ইচ্ছাকৃত ঢিলেমির' ধারণা দূর করতে যোগী আদিত্যনাথের পুলিশকে নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। সেই মামলায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ নম্বর ধারায় মাত্র চারজন প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান রেকর্ড করা হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার উত্তরপ্রদেশ সরকারের আইনজীবী হরিশ সালভেকে প্রধান বিচারপতি এনভি রামান্না, বিচারপতি সূর্য কন্ত এবং বিচারপতি হিমা কোহলির ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন করে, কেন বাকি ৪০ জন প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান রেকর্ড করা হয়নি। সেইসঙ্গে শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘আমাদের মনে হচ্ছে যে আপনারা (উত্তরপ্রদেশ পুলিশ) ইচ্ছাকৃতভাবে ঢিলেমি দিচ্ছেন। দয়া করে সেই ধারণা দূর করে দিন।’ যদিও সালভে দাবি করেন, মুখবন্ধ খামে ইতিমধ্যে লখিমপুর খিরির ঘটনার একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। অভিযোগ উঠছে যে অভিযুক্তদের ক্ষেত্রে নরম মনোভাব নিচ্ছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সকলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তরা জেলে আছেন। বুধবার পর্যন্ত ১০ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। লখিমপুরে দুটি অপরাধ হয়েছিল - প্রথমত, কৃষকদের ধাক্কা মারা এবং দ্বিতীয়ত, একজনকে গণধোলাই দিয়ে হত্যা করা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান রেকর্ড করা হচ্ছিল। কিন্তু দশেরার ছুটির কারণে আদালত বন্ধ ছিল। গ্রেফতারি সত্ত্বেও পুলিশ কেন অভিযুক্তদের নিজেদের হেফাজতে চায়নি, তা নিয়েও বুধবার প্রশ্ন তোলে শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ‘যতক্ষণ না পুলিশ তাঁদের (ধৃতদের) জেরা করছে, ততক্ষণ (সত্যটা) বেরিয়ে আসবে না।’ যদিও সালভে জানান, অভিযুক্তদের ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ভিডিয়োগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ফরেন্সিক রিপোর্ট হাতে এসে গেলে ভবিষ্যতে আর হয়ত জেরার প্রয়োজন হবে না। উল্লেখ্য, গত ৩ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খিরিতে গাড়ির তলায় পিষে মৃত্যু হয় চার কৃষকের। মৃত্যু হয় দুই বিজেপি কর্মী, একজন সাংবাদিক এবং এক চালকেরও। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলে আশিস সেই গাড়িতে ছিলেন। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং তাঁর ছেলে। বরং তাঁদের দাবি ছিল, ঘটনাস্থলে ছিলেন না আশিস। সেই ব্যাখ্যায় অবশ্য সন্তুষ্ট হননি কৃষক এবং বিরোধীরা। তাঁরা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং তাঁর ছেলের গ্রেফতারির দাবি জানাতে থাকেন। তারইমধ্যে ৯ অক্টোবর আশিসকে গ্রেফতার করা হয়।