ꦺ সংসদ চাইলে রুখে দিতে পারে কোনও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তথা NGO (নন গর্ভনমেন্টাল অর্গানাইজেশন) এর বিদেশী বিনিয়োগ, এই বক্তব্য স্পষ্ট করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কোর্ট জানিয়েছে, 'বিদেশি অনুদান পাওয়ার কোন অধিকার নাগরিকের নেই'। শুক্রবারই এই রায় প্রকাশ্যে আসে।
✃ফরেন কন্ট্রিবিউশন (রেগুলেশন) অ্যাক্ট ২০১০-কে তুলে ধরে সুপ্রিমকোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, বিদেশি অনুদান একটি ন্যূনতম পর্যায়ে রাখতে হবে, কারণ এতে দেশের আর্থসামাজিক পরিকাঠামো ও দেশের রাজনীতির ওপর প্রভাব পড়তে পারে। বেঞ্চ স্পষ্ট বার্তায় বলেছে, 'দেশের আর্থ-সামাজিক কাঠামো ও রাজনীতিতে বৈদেশিক অবদান বস্তুগত প্রভাব ফেলতে পারে। বৈদেশিক সাহায্য একটি বিদেশি অবদানকারীর উপস্থিতি তৈরি করতে পারে এবং দেশের নীতিগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে।' একই সঙ্গে বেঞ্চ বলছে, 'এটি রাজনৈতিক মতাদর্শকে প্রভাবিত করতে পারে বা তার ওপর মত চাপিয়ে দিতে পারে। জাতির সাংবিধানিক নৈতিকতার নীতির সাথে মিলিত বিদেশি অবদানের প্রভাবের বিস্তৃতি, সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ না করলে দেশে বিদেশি অবদানের উপস্থিতি বা প্রবাহ ন্যূনতম পর্যায়ে রাখা উচিত।'
🎃ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্যাক্ট বা এফসিআরএ নিয়ে গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন আইনে সংস্কার আনে সরকার। সেই সময় কেন্দ্র স্পষ্ট করে যে, এনজিওগুলির সমস্ত অফিস-কর্মীদের আধার নম্বর সহ রেজিস্ট্রশেন জরুরি, স্বচ্ছ্বতা ধরে রাখতেই এই পদক্ষেপ গৃহিত হয়। এছাড়াও বলা হয়েছে, বিদেশি অনুদান স্টেট ব্যাঙ্কের কোনও মেইন ব্রাঞ্চের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই গ্রহণ করতে হবে। কোনও সংগঠন একটি অঙ্কের টাকা গ্রহণ করলে তা অন্য কাউকে বা অন্য সংগঠনকে তুলে দেওয়ার আগে জানাতে হবে কোন উদ্দেশে সেই অর্থ পাঠানো হচ্ছে। অনুদান থেকে আগে এনজিওগুলি ৫০ শতাংশ অর্থ প্রশাসনিক কাজে ব্যবহার করতে পারত, তবে আইনের নয়া সংস্কারের ফলে সেই অর্থের পরিমাণ ২০ শতাংশে আনা হয়েছে। এই আইনের সংস্কার স্বেচ্ছাচারী এবং বৈষম্যমূলক বলে অভিযোগ তুলে কয়েকটি এনজিও সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। তখনই সুপ্রিম কোর্ট এই রায় দেয়। এই মামলায় কেন্দ্রের তরফে কোর্টে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, বহু অ্যাকাউন্টে হঠাৎ করে বিদেশি অনুদানের অর্থ বেড়ে যাওয়ায় তা নজরে রাখতেই এই পদক্ষেপ গৃহিত হয়েছে। উল্লেখ্য, দেখা গিয়েছে ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বিদেশী অনুদান হু হু করে বেড়েছে দেশে। তারপরই নড়েচড়ে বসে কেন্দ্র। নেওয়া হয় পদক্ষেপ। এরপর সেই আই সংস্কার নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সংসদ চাইলে বিদেশি অর্থের অনুদান রুখে দিতে পারে।