সাত দশক পরে পুকুর ছেড়ে মন্দিরে ঢুকে পড়ল কেরালার বিশাল আকৃতির একমাত্র ‘নিরামিশাষী’ কুমির বাবিয়া। তবে প্রধান পূজারীর কথায় শেষ পর্যন্ত সে জলে ফিরে যায়।উত্তর কেরালার কাসারগোড় জেলার অনন্তপুরা মন্দিরের পুরোহিতদের বয়ান অনুযায়ী, গত মঙ্গলবার আচমকা মন্দিরের পুকুর ছেড়ে গুটিগুটি মন্দির ভবনের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল বাবিয়া। এর আগে তাকে কখনও এ কাজ করতে দেখা যায়নি।তবে চন্দ্রশেখরন নামে এক মন্দিরকর্তা জানিয়েছেন, মন্দিরে প্রবেশ করলেও গর্ভগৃহ পর্যন্ত পৌঁছয়নি অতিকায় কুমিরটি। কিছু ক্ষণ মন্দির চত্বরে কাটানোর পরে প্রধান পুরোহিত চন্দ্রপ্রকাশ নাম্বিসানের আদেশে সে ফের তার বাসস্থান পুকুরে ফিরে যায়। স্থানীয়দের মতে, প্রায় সত্তর বছর যাবৎ মন্দির সংলগ্ন পুকুরে বসবাস করছে বাবিয়া। কী ভাবে সে এখানে এসেছিল, তা নিয়ে নানান মত রয়েছে। তবে অধিকাংশের দাবি, সার্কাস সংস্থার লদস্যরাই কখনও মন্দিরের পুকুরে কুমিরছানা ছেড়ে গিয়েছিলেন। মনে রাখা দরকার, সত্তর-আশি বছর আগে কেরালার সার্কাস দলের যথেষ্ট রমরমা ছিল এবং সেই সময় পশু নিয়ে খেলা দেখানোর উপরে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি না থাকায় প্রতিটি সার্কাস সংস্থাতেই একাধিক পশু-পাখি মজুত থাকত। মন্দিরের পূজারীরা জানিয়েছেন, আজীবন নিরামিশাষী বাবিয়া ভক্তদের আনা প্রসাদ খেয়েই পেট ভরায়। সে কখনও আমিষ খাদ্য গ্রহণ করেনি। এ ছাড়া পুরোহিতরা দু’বেলা তাকে ভাতের দলা এবং মুড়ি-কলা খাওয়ান। প্রধান পুরোহিত তার মুখের ভিতরে হাত ঢুকিয়ে খাবার দিলেও কখনও দাঁত বসানোর চেষ্টা করেনি বিশালাকার এই সরীসৃপ। অন্য কাউকেও কখনও সে তাড়া বা আক্রমণ করেনি। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা অবশ্য জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক পরিমণ্ডলে এই প্রজাতির কুমির প্রবল মাংসাষী হয়। তাদের প্রধান খাদ্য মাছ, ইঁদুর, ভোঁদড় এবং সাপ। সুযোগ পেলে বড় পশুদেরও তারা আক্রমণ করে। অনমন্তপুরা গ্রামের এই মন্দিরের অধিষ্ঠিত বিগ্রহ পদ্মনাভস্বামী, যিনি বিষ্ণুর এক অবতার। বিষ্ণুর বাহন হিসবেই তাই বাবিয়াকে্রদ্ধা করেন স্থানীয় ভক্তবৃন্দ। তবে খাওয়ার সময় ছাড়া তাকে কেউই পুকুর থেকে কখনও উঠে আসতে দেখেনি।