দেশভাগ এবং পরবর্তীতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে বহু বাঙালি শরণার্থি তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তান ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন ভারতের বিভিন্ন জায়গায়। উত্তরাখণ্ডেও আশ্রয় নিয়েছিলেন কয়েক হাজার বাঙালি শরণার্থী। সেরাজ্যের উধম সিং নগরে এখনও বাস করেন কয়েক লাখ বাঙালি শরণার্থী পরিবার। সেই পরিবারগুলিকে ইস্যু করা 'কাস্ট সার্টিফিকেটে' এতদিন 'পূর্ব পাকিস্তান' শব্দটির উল্লেখ থাকত। তবে বৃহস্পতিবার উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি ঘোষণা করলেন যে এবার থেকে বাঙআলিদের ইস্যু করা সার্টিফিকেটে 'পূর্ব পাকিস্তান' শব্দটির উল্লেখ থাকবে না এবার থেকে।উধম সিং নগরে বসবাসকারী বাঙালিদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করে পুষ্কর ধামি জানান যে খুব শীঘ্রই এই সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আনা হবে মন্ত্রিসভায়। এর আগে শরণার্থী বাঙালি পরিবারগুলির তরফে 'পূর্ব পাকিস্তান' শব্দটি তাঁদের সার্টিফিকেট থেকে মোছার আবেদন জানানো হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।সিতারগঞ্জের বিধায়র সৌরভ বহুগুণা জানিয়েছেন যে উধম সিং নগরে বর্তমানে ২ লক্ষ বাঙালির বাস। তাঁদের সার্টিফিকেটে উল্লেখিত 'পূর্ব পাকিস্তান' শব্দটি তাঁরা অসম্মান হিসেবে দেখেন। উধম সিং নগরের বাঙালি পরিবারদের সঙ্গে কথা বলে হিন্দুস্তান টাইমস জানতে পেরেছে যে, প্রাথমিক ভাবে দেশভাগের পর ১৯৫১-৫২ সালে প্রথম বাঙালিরা বসবাস শুরু করেন সেখানে। এরপর ১৯৬০-এর দশক এবং ১৯৭১ সালে আরও অনেক বাঙালি এসে সেখানে বসবাস শুরু করেন। রুদ্রপুরের ট্রানজিট ক্যাম্পে তাঁদের আনা হয়েছিল। সেখান থেকে ধীরে ধীরে রুদ্রপুর এবং শক্তি ফারম এলাকায় তাঁরা বসবাস শুরু করেন। বর্তমানে উধম সিং নগরের খাতিমা, নানকমট্টা, সিতারগঞ্জ, গদরপুর, বাজপুর এলাকাতেও থাকেন অনেক বাঙালি পরিবার।গদরপুরের দুই বারের প্রাক্তন বিধায়ক এবং সেখানকার বাঙালি সমাজের এক সদস্য প্রেমানন্দ মহাজন জানান, তাঁদের সার্টিফিকেটে থাকা 'পূর্ব পাকিস্তান' শব্দটিকে তাঁরা কালো দাগ হিসেবে দেখেন। তিনি বলেন, 'স্বাধীনতার পর আমাদের পূর্বপুরুষ এখানে এসে বসবাস শুরু করেন। আমরা এখানে কয়েক দশক ধরে থাকছি। তাও আমাদের সার্টিফইকেটে 'পূর্ব পাকিস্তানে'র উল্লেখ রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যে ঘোষণা করলেন যে পূর্ব পাকিস্তান' শব্দটি আমাদের সার্টিফিকেট থেকে সরানো হবে, তাকে আমি স্বাগত জানাই।'