শেষ বারের মতো ইউরো কাপ খেলতে নেমেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। স্বাভাবিক ভাবেই পর্তুগালের ম্যাচ মানেই এখন মধ্যমণি তিনিই। মঙ্গলবার ভারতীয় সময়ে মাঝরাতে চেক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে পর্তুগালের ম্যাচে তাই সকলের নজর ছিল সিআরসেভেনের উপরেই। গত বিশ্বকাপে কিছুটা হতাশই করেছিলেন রোনাল্ডো। তবে ন⛎িজের ক্যারিয়ারের শেষ ইউরোতে তাঁর থেকে হয়তো আগুনে পারফরম্যান্সের আশা করেছিলেন ভক্তরা। তবে বয়স যেন তাঁর ক্ষিপ্রতাকে ভোঁতা করে দিয়েছে। তা না হলে চেক গোলকিপারকে একা পেয়েও, ওভাবে গোল 🌱নষ্ট করা যায়! রোনাল্ডো গোল না পেলেও, অবশ্য তাঁর দল জিতল। ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে পরিবর্তে নামা ফ্রান্সিসকো কনসেসাও-এর গোলে অক্সিজেন পায় পর্তুগাল।
জার্মানির লিপজিগ স্টেডিয়ামে চেক প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রথমে পিছিয়ে পড়েছিল পর্তুগীজরা। কিন্তু আত্মঘাতী গোলে সমতা ফেরার পর, ২১ বছরের কনসেসাও-এর গোলে ২-১ জয় ছিনিয়ে নেয় পর্তুগাল। পর্তুগীজদের দু'টি গোলের জন্য দায়ী চেকের রক্ষণ এবং গোলকিপারের গাফিলতি। গোটা ম্যাচে সংগঠিত রক্ষণ এবং ভালো গোলকিপিংয়ের পর দু'টি মারাত্মক ভুলের খেসারত দিতে হয় চেক প্রজ♊াতন্ত্রকে।
চেক প্রজাতন্ত্রের থেকে ধারে-ভারে অনেকটাই এগিয়ে ছিল পর্তুগালের তারকা বোঝাই দল। ইউরোর অন্যতম দাবিদার তারা। ব্রুনো ফার্নান্দেজরা শুরুটা করেছিলেন এক তরফা দাপটের সঙ্গেই। আগ্রাসী মেজাজে আক্রমণের ঝড় তুলেছিলেন। বাঁদিক থেকে রাফায়েল লিয়াও গতিতে নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছিলেন চেক ডিফেন্সের। কিন্তু বড় দলের বিরুদ্ধে কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে রক্ষণাত্মক খেলার স্ট্র্যাটেজি নিয়েছিল চেক প্রজাতন্ত্র। দাঁতে দাঁত চেপে পর্তুগালের সমস্ত আক্রমণ তারা প্রতিহত করে চলেছিল। তার মধ্যেও সুযোগ তৈরি ক🍸রেছিলেন রোনাল্ডোরা।
প্রথমার্ধে অসংখ্য সুযোগ তৈরি করেও, গোলমুখ খুলতে ব্যর্থ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, ব্রুনো ফার্নান্দেজ, রাফায়েল লিয়াও-রা। তার মধ্যে সেরা সুযোগ পেয়েছিলেন রোনাল্ডো নিজে। দু'বার সামনে একা চেকের গোলকিপারকে পেয়েও তাঁর গায়ে ꦫমারেন। ম্যাচের ৮ মিনিটে প্রথম টাচ রোনাল্ডোর। তাঁর হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দুই প্রান্ত থেকে আক্রমণে উঠছিলেন ব্রুনো এবং লিয়াও। কিন্তু ক্রস এবং সেন্টারে নৈপূণ্যের অভাব। অ্যাটাকিং থার্ডে ব্যর্থতা। ২৪ মিনিটে গোলের সুযোগ এসেছিল পর্তুগালের সামনে।༒ প্রায় ২৫ গজে দূর থেকে গোলে শট মারেন ব্রুনো। দুর্দান্ত সেভ চেক কিপার স্টানেকের। প্রথমার্ধে গোলের নীচে অন্তত তিনটে নিশ্চিত গোল বাঁচান স্টানেক।
এর দু'মিনিটে মাথায় আবার সুযোগ। ফার্নান্দেজের লো ক্রসে পা ছোঁয়ালেই গোল। কিন্তু বল পর্যন্ত পৌঁছতেই পারেননি লিয়াও। ম্যাচের ৩২ মিনিটে সহজতম সুযোগটি পেয়েছিলেন রোনাল্ড꧒ো। একা কিপারকে পেয়েও, গোল করতে ব্যর্থ হন। তাঁর বাঁ-পায়ের শট রুখে দেন স্টানেক। প্রথমার্ধের অন্তিমলগ্নে আরও একটি সুযোগ পেয়েছিলেন সিআরসেভেন। তবে গোলের মুখ খুলতে পারেননি। দু'টি সহজ সুযোগ একাই মিস করেন রোনাল্ডো। আগের রোনাল্ডো হলে অনায়াসেই প্রথমার্ধে এগিয়ে যেতে পারত পর্তুগাল। বয়সের ভারে যেন মরচে ধরেছে রোনাল্ডোর নৈপুণ্যে। ম্যাচের প্রথম ৪৫ মিনিট অবশ্য পুরোটাই পর্তুগালের দাপট ছিল।🍸 খেলাও হয় চেক প্রজাতন্ত্রের অর্ধেই। প্রথমার্ধে ৭৪ শতাংশ বলের দখলও ছিল পর্তুগালের। তবে গোলটাই যা হয়নি।
আরও পড়ুন: কাতারের বিতর্কিত গোল, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং ক্ষতিপূরণের দাবি💮তে ফিফার দ্বারস্থ AIFF
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেও একই ছবি। পর্তুগালের একের পর এক আক্রমণ। কিন্তু গোলের মুখ খুলছিল না। তার জন্য কিছুটা হলেও দায়ী লিয়াও। বেশি ক্ষণ পায়ে বল রাখছিলেন তিনি। একা খেলার চেষ্টা করছিলেন। নিজেই গোল করবেন, এই মানসিকতা রাখতে গিয়ে♒ই চাপে ফেলছিলেন দলকে। তবে ম্যাচের ৫৬ মিনিটে বক্সের বাইরে ফ্রি কিক পায় পর্তুগাল। এবারও ব্যর্থ হন রোনাল্ডো। সরাসরি গোলরক্ষকের হাতে মারেন তিনি। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই পালটা প্রতি আক্রমণে উঠে এগিয়ে যায় চেক প্রজাতন্ত্র। ৬২ মিনিটে গোল করেন লুকাস প্রোভোদ। বক্সের বাইরে থেকে দূরপাল্লার শটে অনবদ্য গোল। ডান পায়ের বাঁক খাওয়ানো শটে দিয়েগো কোস্তাকে পরাস্ত করেন তিনি। এই গোলটা হজম করাটা নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা ছিল পর্তুগালের কাছে। তবে সেই লিড বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি চেক।
১-০ করার মিনিট আটেকের মধ্যেই নিজেদের ভুলে চেক প্রজাতন্ত্র গোল উপহার দেন পর্তুগালকে। জোটার ক্রস থেকে নুনো মেন্ডিসের হেড বাঁচান স্টানেক। কিন্তু ঠেলে দেন নিজেদেরই ডিফেন্ডারের পায়ে। রবিন হ্যানাচের পায়ে লেগে বল ঢুকে যায় গোলে। ১-১ সমতা ফেরায় হাঁফ ছাড়ে পর্তুগাল। ম্যাচের ৮৭ মিনিটে আবার অফসাইডের জন্য জোটার গোল বাতিল হয়। রোনাল্ডোর হেড পোস্টে লেগে ফিরলে, সেটা ধরে গোল করেছিলেন জোটা। কিন্তু অফসাইডে ছিলেন রোনাল্ডো। যখন মনে হচ্ছিল, পর্তুগালকে আটকে দেবে চেক প্রজাতন্ত্র, তখন ম্♈যাচের একেবারে অন্তিমলগ্নে জয়সূচক গোলটি করেন কনসেসাও। ৯০ মিনিটের মাথায় পরিবর্তে নেমেই, ২ মিনিটের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেন তিনি। জয়সূচক𓄧 গোলের পর আনন্দে আত্মহারা হয়ে জার্সি খুলে হলুদকার্ডও দেখেন ২১ বছরের তরুণ। তাতেও ‘কুছ পরোয়া নেহি’। তাঁর সৌজন্যেই তো পুরো তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছে পর্তুগাল।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।