‘যদি ডাইভটা দিতাম!' গত বছরের ৯ জুলাই ম্যাঞ্চেস্টারে রান আউটের জন্য তখনও আক্ষেপ ঝরে পড়ছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির গলা থেকে। ‘হিন্দুস্তান টাইমস’ গ্রুপের ‘লাইভ মিন্ট’-এ নিজের কলামে এমন কথাই জানিয়েছেন বোরিয়া মজুমদার। যাঁর সঙ্গে সেদিন একান্তে কথা বলে𝓡ছিলেন ধোনি।
বোরিয়া জানান, আগের বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে নয়াদিল্লিতে একটি স্পনসরের হয়ে 'চ্যাট শো' ছিল ধোনির। সেই শোয়ের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। 'চ্যাট শো'-এর পর﷽ তাঁকে মধ্যাহ্ণভোজের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ধোনি। সেই সময় কী কথা হয়েছিল, তা নিজের কলামে লিখেছেন বোরিয়া।
নিজের লেখনীতে বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিক জানান -
সেখানে আর কেউ ছিলেন না। তাই সংবাদমাধ্যমে কী প্রকাশিত হবে, তা না ভেবেই আমরা কথা বলতে পারতাম। আমি ঘরে ঢোকার সময় ধোনি হেসে বলেন, 'এটা আপাতত লিখবেন না।' আমার তাতে কোনও সমস্যা ছিল না, কারণ ওঁর মাথ♌ায় কী চলছে সেটা আমি বুঝতে পারতাম। মধ্যাহ্নভোজের অর্ডার দেওয়ার সময় নিজের আইপ্যাড নিয়ে একটি সোফায় বসেন ধোনি। আমায় পাশে বসতে বলেন। আমায় কিছু দেখাতে চাইলেন। তখন সাধারণের তুলনায় খানিকটা বেশি মনোযোগী লাগছিল ধোনিকে। আমাদের সামনে ছিল পাহাড়ের অসামান্য সৌন্দর্যের মধ্যে দাঁড়ানো ধোনির কয়েকটি ছবি। ধোনি বলেন, ‘সেনার এই ক্যাম্পে আমি গত সপ্তাহে গিয়েছিলাম। এটার বিষয়ে বেশি কেউ জানেন না। আমি খোলা আকাশের নীচে শুয়েছিলাম এবং সব ড্রিল করেছিলাম। আমি সেখানে মহেন্দ্র সিং ধোনি ছিলাম না এবং সেটাই আমার সবথেকে বড় সন্তুষ্টির জায়গা ছিল। সেনা আমি আর পাঁচজন জওয়ানের মতোই এবং আমি পরিশ্রান্তি পেতে পারি।’
২০১৯ সালে বিশ্বকাপে ধোনি যে পরিস্থিতির মধ্যে ছিলেন, তা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই কি 𝓰সেনায় চলে গিয়েছিলেন🌊? উনি সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারটা কি হজম করতে পারেননি? মনের গভীরে আঘাতের কারণে কি ক্রিকেট থেকে দূরে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত? উনি অতটাও ‘কুল’ নন, যতটা নিজেকে তুলে ধরেন? আমি ওই প্রশ্নগুলি জিজ্ঞাসা করি। কিন্তু উনি সরাসরি উত্তর দেননি।
ছবি দেখতে দেখতেই ধোনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমার ডাইভ দেওয়া উচিত ছিল (২০১৯ সালের বিশ্বকাপের নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে রান আউটে)। আমি যদܫি ডাইভ দিতাম, তাহলে ওই দু'ইঞ্চি দূরত্বটা পার করে দিতে পারতাম এবং কোনওভাবেই আমি আউট হতাম না।’ আমায় কৌতূহলী এবং বিভ্রান্ত দেখে হাসেন ধোনি। তারপর একভাবে বলে চলেন, ‘আপনি জানেন, আমি জীবনে কখনও ডাইভ দিইনি। তাই আমি যখন দ্বিতীয় রানের জন্য যাচ্ছিলাম, তখন ডাইভ দেওয়ার বিষয়টি আমার মাথায় আসে। ☂কিন্তু আমি তো কখনও ডাইভ দিইনি। আমার মনে হয়েছিল, আমি পৌঁছে যেতে পারব। শুধু যদি আমি ডাইভ দিতাম…’
ধোনির কথাটা শেষ পর মার্টিন গাপ্টিলের সেই অবিস্মরণীয় থ্রো যেন ঘরে নিঃশব্দে হাজির হয়ে যায়। ১০ বলে ২৪ রান চাই - এই অবস্থায় সেমিফাইনালে দ্বিতীয় রানের জন্য দৌড়েছিলেন ধোনি। উনি জীবনে এরকম লক্ষ্য একশোবার পার 𒉰করেছেন এবং এটা বিশ্বাস করার কোনও জায়গা ছিল না যে উনি পারবেন না - 🌸শেষবারের জন্য।
পুরো আলোচনায় সেই রান আউটেরই আধিপত্য ছিল এবং আমি বুঝতে পারছিলাম, ধোনি রান আউটের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেননি। ‘সেমিফাইনাল শেষ ওভারে বল করার কথা ছিল জিমি নিশমের এবং আমি নিজের উপর বিশ্বাস রেখেছিলাম। আপনি ক্রিকেটে কোনও কিছু বলতে পারেন না। কিন্তু ১৬-১৭ রান মোটেও…’ কথা শেষ করার আগেই থেমে যান ধোনি। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ধোনির বিরুদ্ধে নিশম, যা সারাবিশ্ব দেখছে, সেখানে একজনই জয়ী হতে পারেন। আর সেটা𒀰 ধোনির থেকে ভালো কেউ জানতেন না। ধোনি বলেন, ‘আমি সর্বক্ষণ ইনিংসের ঘুঁটি সাজিয়েছিলাম এবং জাড্ডুর (রবীন্দ্র জাদেজা) সঙ্গে মূল্যায়ন করছিলাম যে আমাদের কী করতে হবে। এক ইঞ্চির জন্য আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হল না।’
স্পষ্টতই ধোনির চোখেমুখে ফুটে উঠছিল যন্ত্রণা এবং গভীর হতাশা। অন্য সবকিছু থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিতে সেনায় চলে গিয়েছিলেন ধোনি। দেশের সেবায় নিয়োজিত জওয়ানের অভিজ্ঞতায় তিনি নিজেকে হারিয়ে দিতে পারতেন এবং ইংল্যান্ডের ধাক্কা ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করতেন। উইকেটের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম সেরা রানারের সেটাই হয়ে দাঁড়ায় শেষ ইনিংস। ধোনি বলেন, ‘আমি যখন মাঠের বাইরে আসছিলাম, তখন আমি নিজেকে সেই ভাবনা থেকে আটকাতে পারিনি যে এভাবেই সবকিছু শুরু হয়েছিল। আমি নিজের একেবারে প্রথম ইনিংসে রান আউট হয়েছিলাম এবং এখানে আমি আবার রান আউট হলাম। যা আমার শে🌳ষ (ম্যাচ) হতে পারে।’
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।