মহাকাশ থেকে পৃথিবীর ছবি আগেও বহুবার ক্যামেরাবন্দী করেছেন মহাকাশচারীরা, কিন্তু এবার রচিত হল এক নতুন ইতিহাস। আরব দুনিয়ার প্রথম মহাকাশচারী ফ্রেমবন্দী করলেন প্রাচ্য আর পাশ্চাত্যের মিলন চিত্র। মহাকাশচারী সুলতান আল নিয়াদি টুইটারে মহাকাশ থেকে তোলা একটি ছবি শেয়ার করেছেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে তুরস্কের বসপোরাস প্রণালীর ছবি। এটি কৃষ্ণ সাগরকে মারমারা সাগরের সাথে সংযুক্ত করেছে। এই ছবিটা পোস্ট করে আল নিয়াদি তাঁর টুইটে লিখেছেন, ‘এটি বসফরাস প্রণালী, এক অনন্য স্থান যেখানে এশিয়া মহাদেশের সাথে ইউরোপ মহাদেশের মিলন ঘটেছে। মিলন ঘটেছে অতীতের সাথে বর্তমানের।’ আল নিয়াদি বর্তমানে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে রয়েছে।ইউনাইটেড আরব এমিরেটসের নাগরিক আল নিয়াদি রবিবার টুইটে লেখেন, ‘আইএসএস থেকে, ইস্তাম্বুল তুরস্তকে রাতের বেলা উজ্জ্বল দেখাচ্ছে। মহাকাশের ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে বসে ইতিহাসবিজড়িত কথা লেখেন টুইটারে, সত্যিই আরব তথা এশিয়ার প্রাচীন সভ্যতা-সংস্কৃতির সাথে যেন মিলে যাচ্ছে আধুনিক বিশ্ব তথা ইউরোপ। আইএসএস থেকে এই প্রথম নিয়াদি ছবি শেয়ার করলেন, এমনটা নয়। আল নিয়াদি আগেও স্পেস স্টেশন থেকে মক্কা, দুবাই, চাঁদ এবং আরও অনেক জায়গার মনমুগ্ধকর ছবি শেয়ার করেছেন।প্রথমবার মহাকাশে যাওয়া সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আল নিয়াদিকে ভালোবেসে ‘মহাকাশের সুলতান’ বলেও ডাকছেন কেউ কেউ। তিনি ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে মহাবিশ্বের বিস্ময়কর জগতের সাথে উপসাগরীয় অঞ্চলের শিশুদের পরিচিত করেছেন তিন মাস ধরে। প্রায়ই তিনি আইএসএস থেকে টুইটারে ভিডিও আপলোড করেন।তিনিই প্রথম আরব বংশদ্ভুত, যাকে একটি দীর্ঘমেয়াদী মহাকাশ অভিযানে পাঠানো হয়েছে। গত এপ্রিল মাসেই এই ঐতিয়াহসিক যাত্রা করেন তিনি। স্পেসওয়াকের উদ্দেশ্য ছিল আইএসএস পাওয়ার চ্যানেলগুলি আপডেট করা এবং এটি সাত ঘন্টা ধরে সম্প্রচার করা।আল নেয়াদি গত মাসে সিএনএন মিডিয়ার বেকি অ্যান্ডারসনকে তাঁর অভিযান সম্পর্কে বলে, ‘আমি স্পেসওয়াকটি সেভাবে অনুভব করিনি, কারণ আমি সত্যিই মিশনের ওপর ফোকাস করছিলাম, এবং এটি সত্যিই এক দুর্দান্ত অনুভূতি ছিল। আপনার মনে হবে আপনি একটি স্পেসসুটে ভাসছেন।’ নিয়াদি আরও বলেন, ‘এটি একটি ছোট মহাকাশযানের মতো। এটি অক্সিজেনের জোগান দেয় এবং কার্বণ ডাই অক্সাইডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়াও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ করে, যা মহাকশের তাপমাত্রা থেকে আপনাকে রক্ষা করে।’ প্রকৃত অর্থেই নতুন এক মাইলস্টোন যেমন স্থাপন হচ্ছে, তেমনই মহাবিশ্বে এক উপভোগ্য সময় কাটাচ্ছেন নিয়াদি। তিনি কখনও ১৯৫০ এর দশকে লেখা ‘চাঁদে টিনটিন’ কমিকসে ডুব দিচ্ছেন, কখনও বা তুলে ধরছেন ইউরোপ-এশিয়ার যোগসূত্রের বিস্ময়কর ছবি।