মহাকাশ অভিযান বলতে এখনও আমজনতা শুধ꧂ুই গবেষণা, বিজ্ঞানচর্চার কথা ভাবেন। কিন্তু প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে যে এটি একটি দুর্দান্ত ব্যবসার ক্ষে♊ত্র হয়ে উঠেছে, সেই খবর কতজন রাখেন?
বিদেশ যেতে হবে না। আমাদের ইন্ডিয়ান স্পেস রিস♕ার্চ অর্গানাইজেশনের (ISRO) কথাই ধরা যাক। ইসরোর নানা অভিযানের সময়ে অনেকেই 'সরকারি অর্থের অপচয়ের' অভিযোগ তোলেন। কিন্তু তাঁদের অজানা, বিশ্বব্যাপী গ্রাহকদের জন্য স্যাটেলাইট, রকেট লঞ্চের পরিষেবা দেয় ইসরো। আর তার বিনিময়ে মোটা টাকা মুনাফা করে সংস্থা। উদাহরণস্বরূপ, গত অর্থবর্ষেই ইসরো ২৭৯ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। যা যে কোনও বড় সংস্থাকেও লজ্জায় ফেলে দেবে।
এবার সেই ব্যবসার ক্ষেত্রতেই ধীরে ধীরౠে প্রবেশ করতে শুরু করেছে ভারতীয় বেসরকারি সংস্থাগুলি। অবশ্য ধীরে ধীরে বললে ভুল হবে। ২০২০ সালের জুনে কেন্দ্রীয় সরকার বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণের জন্য মহাকাশ খাত উন্মুক্ত করে দেয়। আর তারপর থেকে ইসরো-তে নাম নথিভুক্ত করেছে দেশের ১০০-টিরও বেশি বেসরকারি মহাকাশ অভিযান সংস্থা। আর তাদের মধ্যেই অন্যতম স্কাইরুট(Skyroot)।
শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর দেশের প্রথম বেসরকারি রকেট লঞ্চের মাধ্যমে ইতিহাস সৃষ্টি করে স্কাইরুট। পৃথিবী নিকটস্থ কক্ষপথে পে-লোড পৌঁছে দেয় সংস্থা। পড়ুন সেই খবর: ইতিহাস ত🅰ৈরি করল ISRO! উৎক্ষেপণ হ��ল ভারতের প্রথম বেসরকারি সংস্থার রকেটের
স্কাইরুটের দুই প্রতিষ্ঠাতা পবন পবন চন্দনা ও ভরত দাকা। ২০১৮ সালে সংস্থার প্রতিষ্ঠা। পবন চন্দনা আইআইটি খড়গপুরের প্রাক্তনী। রকেট ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন𓆏 তিনি। সেই চাকরি ছেড়ে মহাকাশ ব্যবসার জগতে প্রবেশ। সঙ্গে পান ভরত দাকাকে। তিনিও আইআইটি মাদ্রাজের প্রাক্তনী। ইসরোর মতো সংস্থায় কাজ করেছেন। ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।
স্কাইরুটে উচ্চপদে দায়িত্বে𝐆 রয়েছেন পদ্মশ্রী জ্ঞানগান্ধী ভি, ইশ্বরন ভিজি, সেলভারাজু এস-এর মতো প্রখ্যাত মহাকাশযান বিশেষজ্ঞরা। বাসুদেবন জ্ঞানগান্ধী ভি-কে ভারতের ক্রায়োজেনিক ইঞ্জিন প্রযুജক্তির পথিকৃত বলা হয়। ফলে স্কাইরুট যে বেশ তোরজোড় নিয়েই এই ব্যবসায় নেমেছে, তা বলাই যায়।
ম🔥ূলত ISRO-রই প্রাক্তন কর্মী, বিশেষজ্ঞদের হাতে গড়ে ওঠে স্ক♕াইরুট।
Myntra-যোগ
মহাকাশে রকেট পাঠাবে এমন সংস্থা। আপনি হলে তাতে টাকা বিনিয়োগ করতেন? এমন অ✅ভাবনীয় সংস্থাতেই সিড ফান্ডিং করেছিলেন মুকেশ বনসল। জনপ্রিয় ফ্যাশান ই-কমার্স সংস্থা Myntra-র সহ-প্রতিষ্ঠাতা মুকেশ বনসল।
এছাড়াও স্কাইরুট প্রাথমিকভাবে মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা সংস্থা সোলার ইন্ডাস্ট্রিজের থেকে প্রাথমিকভাবে ৪.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগඣ্রহ করে।
Skyroot Aerospace, এখনও পর্যন্ত ৬৮ মিলিয়ন মার্কিন ꦇডলারের তহবিল সংগ্রহ করেছে। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৫৫৪ কোটি টাকা। এটি বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে বেশি ফান্ডেড বাণিজ্যিক স্পেস স্টার্টআপ। ভারতেই সম্পূর্ণ 3D-প্রিন্টেড প্রযুক্তিতে রকেট ইঞ্জিন তৈরি করা প্রথম সংস্থাগুলি মধ্যেও এটি অন্যতম। গত বছরের নভেম্বরে সংস্থাটি সফলভাবে পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ প্রদর্শন করেছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে, ১৯ মে, এই সংস্থা Kalam-100 নামের একটি ভারতে নির্মিত সলিড ♕ফুয়েল ইঞ্জিনও পরীক্ষা করেছে।
ISRO-র সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে স্কাইরুট তাদের নানা সুযোগ-⛎সুবিধা পায়। এটিই প্রথম স্টার্টআপ যা ইসরোর ফেসিলিটি ব্যবহার করার অনুমোদন পেয়েছে।
স্কাইরুট চলতি বছরের শেষ থেকে স্যাটেলাইট লঞꦚ্চের জন্য বুকিংও শুরু করেছে। সংস্থা জানিয়েছে বিশ্বব্যাপী গ্রাহকদের ভালই সারা পাচ্ছে তারা।
শক্তির প্রদর্শন
স্কাইরুট অ্যারোস্পেসের সিইও পবন চন্দনা মিন্টকে জানান, বিক্রম-এস লঞ্চারটি সংস্থার প্রথম প্রদর্শনীমূলক অভিযান। এই রকেট স্টেজে কালাম-80 ইঞ্জিন ব্যবহৃত হয়েছে। এই ইঞ্জিনটি 'কম্🍃পোসিট ফাইবার-নির্মিত সলিড ফুয়োল মোটর প্রযুক্তির নমুনা তুলে ধরবে। আগামিদিনে বিক্রম সিরিজের অন্য লঞ্চ ভিহেকেলেও 🍬এটি ব্যবহৃত হবে। স্কাইরুট, সহযোগী আরও এক বেসরকারি স্পেস ফার্ম অগ্নিকুল কসমসের সঙ্গে, গত দুই বছর ধরে তাদের রকেটের স্টেজের জন্য ইঞ্জিন তৈরি এবং পরীক্ষা করেছে।
মার্কিন মুলুকে NASA-র থেকে বড় বরাত পাওয়ার আগে ꦦইলন মাস্কের SpaceX-কেও কিন্তু তার সক্ষমতার প্রমাণ দিতে হয়েছিল। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক নিজেরই অপর সংস্থা টেসলার 🐈একটি গাড়ি পে-লোড হিসাবে মহাকাশে পাঠিয়েছিলেন। এরপরেই বরাত পেতে শুরু করে টেসলা।
স্কাইরুটের ক্ষেত্রেও বিষয়টি তেমন। শুক্রবারের এই রকেট লঞ্চটি সংস্থার কাছে অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ। কারণ এই সফল লঞ্চ দেখিয়েই আগামিদিনে বিশ্বজুড়ে গ্রাহকদের থেকে বরাত নি💞তে পারবে সংস্থা।
মহাকাশ ফেরি
খুব সহজ ভাষায়, বিষয়টি অনেকটা গাড়ি ভাড়ার মতো ভাবতে পারেন। ধরুন কোনও দেশ, বা সংস্থার স্যাটেলাইট তৈরির প্রযুক্তি আছে। কিন্তু সেটি মহাকাশে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষমতা নেই। স্কাইরুটের মতো সংস্থা তখন নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে সেই কাজ করে দেবে। সেই উড়ানের খরচটুকু বাদ দিলে বাকি যে অতিরিক্ত টাকা স্কাইরুট নেবে, সেটাই তাদের মুনাফা। আরও পড়ুন: Skyroot Space Launch: ভারতে প্রথম বেসরকারি সংস্থার রকেট উৎক্ষেপণ হ🐻তে চলেছে
ভারতের বাণিজ্য সংগঠন স্যাটেলাইট ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (SIA) ডিরেক্টর ღজেনারেল অনিল প্রকাশ মিন্টকে জানান, ২০২৫ সালের মধ্যে ৬০ হাজারেরও বেশি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হতে পারে। ভারতের বেসরকারি সংস্থাগুলি এর মধ্যে এক বড় অংশের বরাত পেতে পারে।