‘চিন-পাকিস্তানকে একসাথে এনেছেন কেন্দ্রের মোদী সরকার।’ গতকাল সংসদে এই ভাষাতেই বিজেপি সরকারকে তাদের বিদেশ নীতি নিয়ে আক্রমণ শানিয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। এরপরই রাহুলের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কড়া প্রতিক্রিয়া দেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আর এরপরই মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল রাহুলের এই মন্তব্যকে তাঁরা সমর্থন করে না। গতকাল মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্রকে রাহুলের মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ‘আমি পাকিস্তান ও চিনের উপরই ছেড়ে দেব তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে কথা বলার জন্য। তবে সেই মন্তব্যকে (রাহুল গান্ধীর মন্তব্য) সমর্থন করে না আমেরিকা।’ মার্কিন আধিকারিক আরও বলেন, ‘আমরা কোনও দেশকেই বলিনি যে তাদের আমেরিকা বা চিনের পাশেই থাকতে হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বিভিন্ন দেশের সম্পর্ক গড়ার সুযোগ প্রদান করাই আমাদের উদ্দেশ্য। এবং আমরা মনে করি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অংশীদারিত্ব অনেক ক্ষেত্রেই সুবিধা দেয় সেই দেশগুলিকে। চিন যে ধরণের সম্পর্ক চায়, তাতে অবশ্য অংশীদারিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না।’ তবে নেড প্রাইস মনে করান যে পাকিস্তান আমেরিকার কৌশলগত পার্টনার। তিনি বলেন, ‘ইসলামাবাদের সরকারের সাথে আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে এবং এই সম্পর্ক থেকে আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে লাভবান হয়েছি।’এর আগে সংসদে রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, ‘মৌলিকভাবে ভারতের বৈদেশিক নীতির অন্যতম কৌশলগত নীতি ছিল যে চিন এবং পাকিস্তানকে আলাদা রাখতে হবে। কিন্তু এই নরেন্দ্র মোদী সরকারই চিন এবং পাকিস্তানকে একসঙ্গে নিয়ে এসেছে।’ রাহুলের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পাল্টা জবাব দিয়ে টুইট করেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি লেখেন, ‘লোকসভায় রাহুল গান্ধী দাবি করেন যে বর্তমান সরকারি নাকি চিন ও পাকিস্তানকে কাছাকাছি এনেছে। তাঁর আদতে ইতিহাসের পাঠ প্রয়োজন। ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান বেআইনিভাবে শাকসগাম উপত্যকা চিনের হাতে তুলে দেয়। চিন ১৯৭০ সালে পাক অধিকৃত কাশ্মীর দিয়ে কারাকোরাম হাইওয়ে তৈরি করে। ১৯৭০ সালের দশক থেকে দুই দেশের মধ্যে পারমাণবিক ক্ষেত্রে সমন্বয় গড়ে উঠেছে। ২০১৩ সালে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (চিনের 'ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড' প্রকল্পের অন্যতম অঙ্গ) অন্যতম প্রকল্পের চালু হয়। তাই নিজেকে প্রশ্ন করুন, সেই সময় চিন এবং পাকিস্তান কি দূরে ছিল?’