যাঁরা এত দিন ধরে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে এবং গণতান্ত্রিক সমস্ত নিয়ম মেনেই হকের চাকরি ফেরত পাওয়ার জন্য টানা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছেন, সেই চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষক শিক্ষিকারা আজ হঠাৎ করে এতটা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন কেন? কেন তাঁরা বিকাশ ভবনের মতো একটি সরকারি স্থাপত্যের ফটক ভেঙে ভিতরে ঢুকে গেলেন? সংবাদমাধ্যমে এই প্রশ্নেরই জবাব দিয়েছেন চাকরিহারা শিক্ষকদের প্রতিনিধি মেহবুব মণ্ডল।
তিনি জানিয়েছেন, হকের চাকরি ফেরত পাওয়ার দাবিতে এত দিন ধরে তাঁরা অত্যন্ত ধৈর্য্য সহকারেই রাস্তায় নেমে আন্দোলন, বিক্ষোভ, অনশন করেছেন। কিন্তু, রাজ্য সরকার বারবার তাঁদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভাঙছে। তার জেরেই আজ (বৃহস্পতিবার - ১৫ মে, ২০২৫) সল্টলেকের বিকাশ ভবনের সামনে পরিস্থিতি এতটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
মেহবুব মণ্ডলের বক্তব্য, তাঁরা কেউই দুর্নীতি করে চাকরি পাননি। নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। অথচ, আজ যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তার জেরে তাঁদের ফের এত বছর চাকরি করার পর পরীক্ষায় বসতে বলা হচ্ছে। মেহবুব জানিয়েছেন, তাঁরা কিছুতেই এই সিদ্ধান্ত মানবেন না। তাঁদের নতুন করে কোনওরকম পরীক্ষা, ইন্টারভিউ ছাড়াই পুরোনো পদে সম্মানের সঙ্গে ফের বহাল করতে হবে।
কিন্তু, তাঁদের কাছে খবর আসে, সরকার পক্ষ তলে তলে পরীক্ষার প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে। এমনকী, তারা বিজ্ঞপ্তিও তৈরি করে ফেলেছে। এবং এ নিয়ে 'যোগ্য' চাকরিহারাদের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা পর্যন্ত করা হয়নি। এর আগে একইভাবে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন দাখিল করার সময়েও 'যোগ্য' চাকরিহারাদের অন্ধকারে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন মেহবুব।
এই বিষয়ে তিনি বলেন, 'আমরা দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেব না। নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতেই দেব না। যতক্ষণ পর্যন্ত সদর্থক কোনও ইঙ্গিত না আসছে, আমরা বিকাশ ভবন ছাড়ব না।'
উল্লেখ্য, এর আগে একটানা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছেন 'যোগ্য' চাকরিহারারা। মাঝে সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ায় পুলিশের পক্ষ থেকে আন্দোলন প্রত্য়াহার করার আবেদন জানিয়ে চাকরিহারাদের চিঠি পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, কোনও অবস্থাতেই আজকের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, আন্দেলনকারীরা বিকাশ ভবনের ভিতরেই রয়েছেন। তাঁরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সরকার পক্ষ তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে অবস্থান স্পষ্ট করছে, তাঁরা বিকাশ ভবন ছাড়বেন না।