আষাঢ় মাসে শুক্ল পক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে রথ যাত্রা। ইংরেজি তারিখ অনুযায়ী ২৩ জুন জগন্নাথের রথ যাত্রা। এর আগে জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমায় জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রাকে জগন্নাথ মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে বার করে ১০৮ কলসির সুবাসিত জলে স্নান করানো হয়। এর পর ১৫ দিন পর্যন্ত তিন ভাইবোন নিভৃতবাসে থাকেন। ভক্তজনের বিশ্বাস, জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমার দিন অত্যধিক স্নানের ফলে জ্বরে কাবু হয়ে পড়েছেন তিন জনই। তাই এই সময় বিভিন্ন ঔষধি সেবন করানো হয় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে। রথ যাত্রা পার্বনের সঙ্গে বেশ কয়েকটি চমকপ্রদ রীতি ও উপকথা জড়িয়ে রয়েছে।জ্যৈষ্ঠ মাসে পূর্ণিমার দিন যে কুয়োর জলে বিগ্রহদের স্নান করানো হয়, তার মুখ বছরে শুধু একবার এই তিথিতে খোলা হয়। জল তোনার পরে আবার বন্ধ করে দেওয়া হয় কুয়োর মুখ। মোট ১০৮ কলসি জলে স্নান করেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা।প্রতি বছর জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার বিগ্রহ নিমকাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়। বিগ্রহ গড়ার সময় রঙের ব্যবহারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। জগন্নাথ শ্যামলবর্ণের হওয়ায়, গাঢ় রঙের নিম কাঠ দিয়েই তাঁর প্রতিমা তৈরি হয়। আবার তাঁর দুই ভাই-বোন ফর্সা হওয়ায়, হাল্কা রঙের নিমকাঠ দিয়ে তাঁদের প্রতিমা গড়ে তোলা হয়।তিন জনের রথের গঠনশৈলী ও আকার আলাদা। রথ নির্মাণ করা হয় নারকেল কাঠ দিয়ে। জগন্নাথের রথ অন্য দুই রথের তুলনায় বড় হয়। এই রথের রং লাল-হলুদ। জগন্নাথের রথ সবচেয়ে পিছনে থাকে। যাত্রায় একেবারে সামনে থাকে বলভদ্রের রথ এবং তাঁর পিছনে সুভদ্রার রথ থাকে।জগন্নাথের রথের নাম নন্দীঘোষ, উচ্চতা ৪৫.৬ ফুট। বলরামের রথের নাম তালধ্বজ, উচ্চতা ৪৫ ফুট। সুভদ্রার রথ দর্পদলনের উচ্চতা ৪৪.৬ ফুট।অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকে নতুন রথ নির্মাণ শুরু হয়। প্রত্যেক বছর নতুন রথ তৈরি করা হয়। রথ নির্মাণে কোনও রকম পেরেক বা ধাতুর ব্যবহার নিষিদ্ধ।