২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাস। তৎকালীন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব ভাগীরথী নদীর উপর আজিমগঞ্জ-নসিপুর রেল সেতুর শিলান্যাস করেছিলেন। তারপর থেকেই শুরু হয় স্বপ্ন বোনার কাজ। কথা ছিল ২০১০ সালের মধ্য়ে কাজ শেষ করা হবে। কিন্তু ভোট আসে। ভোট যায়। কিছুতেই সেই রেললাইনের কাজ শেষ হত না। সেতু নির্মাণ অনেকটাই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রেললাইনের কাজ কিছুতেই হচ্ছিল না। মূলত জমিজটের জেরেই রেললাইন তৈরির কাজ থমকে ছিল। বছরের পর বছর ধরে একই পরিস্থিতি। এদিকে একদিকে রেললাইন পাতা না হওয়ার জেরে স্থানীয়দের মধ্য়ে ক্ষোভ ছড়াচ্ছিল। আবার জমি অধিগ্রহণকে ঘিরে অশান্তি ছড়াতে থাকে। এমনকী জমি দেওয়ার বিনিময়ে চাকরি চাইছিলেন স্থানীয়দের একাংশ। এদিকে রেলের কর্তারা বিভিন্ন সময়ে এই সেতুর কাজ দেখে গিয়েছিলেন। তারপর ধাপে ধাপে জট কাটতে থাকে। অবশেষে বাস্তবায়নের পথে আজমিগঞ্জ-নসিপুর রেলসেতু। বছরের পর বছর ধরে এই সেতুর জন্য অপেক্ষা করছিলেন সাধারণ মানুষ। সেই সেতুই রূপ পাচ্ছে এবার। আগামী মাসেই এই সেতুর উদ্বোধন হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই সেতুর উদ্বোধন করতে পারেন বলে খবর। আজিমগঞ্জ নসিপুর রেল সেতু চালু হলে শিয়ালদা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি ভায়া আজিমগঞ্জ দূরত্ব কিছুটা কমছে। দূরত্ব কমে হচ্ছে ৫৫৩ কিমি। সূত্রের খবর, লালগোলা-শিয়ালদা শাখার সঙ্গে কাটোয়া- আজিমগঞ্জ শাখার রেল যোগাযোগ আগামী মাসেই শুরু হতে পারে। সেতু কতটা ভার সহ্য করতে পারবে সেটা আপাতত পরীক্ষা করা হয়েছে। এক্ষেত্রে পাথর বোঝাই মালগাড়ি চাপিয়ে ভার বহন কতটা করতে পারবে সেটা দেখা হয়েছে। এই নয়া রেললাইনের জেরে সুবিধা কতটা হবে? এই রুটে রেল চলাচল শুরু হলে বহরমপুর থেকেই যাত্রীরা সরাসরি দিল্লি-মুম্বই সহ ভিনরাজ্যে পাড়ি দিতে পারবেন। যারা হাজারদুয়ারি বেড়াতে আসতে চান তাদের ক্ষেত্রেও অনেকটা সুবিধে হবে। এই পথেই যাতায়াত করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সুবিধা হবে। তবে নানা জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে রূপ পাচ্ছে এই রেললাইন। সামনেই লোকসভা ভোট। তার আগেই খুলে যেতে পারে এই রেলললাইন। নিঃসন্দেহে এটা বিরাট পাওনা স্থানীয়দের কাছে। পাশাপাশি যাঁরা হাজারদুয়ারিতে যেতে চান তাঁদের ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হবে। শিয়ালদা থেকে ভায়া আজিমগঞ্জ এনজেপির দূরত্বও কিছুটা কমবে। সেই নিরিখে এই বিকল্প রেললাইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবার এই রেললাইন কবে খুলে দেওয়া হবে তারই প্রহর গুণছেন জেলাবাসী।