ভোটের আগে উদ্বাস্তুদের ‘যোগ্য মর্যাদা’ দিতে কোনও কসুর ছাড়ল না রাজ্য সরকার। রাজ্যের উদ্বাস্তু কলোনিতে নিঃশর্তে দলিল দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্বাস্তু কলোনিতে যাঁরা যে অবস্থায় আছেন, তাঁরা সেইমতোই দলিল পাবেন। তাঁদের দেওয়া হবে পাট্টা। যে মতুয়ারা এখনও পাট্টা পাননি, তাঁদেরও তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।বৃহস্পতিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা জানান, কলকাতার বেহালা, যাদবপুর, ঢাকুরিয়া-সহ সারা রাজ্যের যেখানে যেখানে উদ্বাস্তু কলোনি আছে, সেখানে সমীক্ষা চালাচ্ছে রাজ্য সরকার। সেই সমীক্ষার ভিত্তিতে জমির দলিল প্রদান করা হবে। এভাবে গত দু'বছরে গ্রাম বাংলার ২১৩ টি উদ্বাস্তু কলোনি অনুমোদন পেয়েছে। ৩০,০০০ পাট্টা বিলি করা হয়েছে। আরও ১২,০০০ জনকে পাট্টা প্রদান করা হবে। সেইসঙ্গে বৃহস্পতিবার আরও ৩১ টি কলোনিতে ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য। তার ফলে ৩,৮৫০ জন পাট্টা পেতে চলেছেন। সবমিলিয়ে রাজ্যে ২৭৯,০০০ পাট্টা বিলি করা হয়েছে বলে জানিয়ে মমতার দাবি করেন, ‘কোনও উদ্বাস্তু নিজের নিঃশর্তে দলিলের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন না। কোনও কলোনি বাদ যাবে না’মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, রাজ্য, কেন্দ্র বা বেসরকারি কলোনি - কোথাও কাউকে উচ্ছেদ করা যাবে না। বাঁকুড়া, উত্তর ২৪ পরগনা-সহ কযেকটি জায়গায় কেন্দ্র উচ্ছেদের নোটিস দিয়েছে বলে ক্ষোভপ্রকাশ করেন মমতা। কিন্তু মমতার হুঁশিয়ারি, ‘আমরা বলছি, এভাবে কাউকে উচ্ছেদ করা যাবে না। আমরা তাঁদের দলিল দেব এবং তাঁরা বাঁচার অধিকার পাবেন। কাউকে উচ্ছেদ করা যাবে না।’যদিও মমতার সেই ঘোষণার পর প্রশ্ন উঠছে, যে কলোনিগুলিতে কেন্দ্রীয় সরকারের জমি রয়েছে, সেখানকার জমির দলিল কীভাবে দেবে রাজ্য? আগে তো রাজ্য সরকারের হাতে সেই জমি আসতে হবে। তারপর জমির পাট্টা দিতে পারবে রাজ্য। একাংশের প্রশ্ন, সেরকমভাবে দলিল দিলে তো আগামিদিনে ওই ব্যক্তি সমস্যায় পড়তে পারেন? তখন কী হবে? তখন কি দায় নেবে রাজ্য? নাকি উলটে মমতার ঘোষণায় আবারও কেন্দ্র-রাজ্যে সংঘাতের পথ প্রশস্ত হয়ে গেল?