কয়েকদিন ধরেই রাজ্যে হুড়মুড়িয়ে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। প্রায় প্রতিদিনই আক্রান্তের নিরিখে নয়া রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। এই অবস্থায় রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হওয়ার কথা স্বীকার করে নিল নবান্ন।সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'বিভিন্ন স্তরের বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানীরা, সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে কথা বলে ধারণা করা হচ্ছে, বাংলার কিছু কিছু জায়গায় গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে।'গোষ্ঠী সংক্রমণ পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো আরও জোরদার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে নবান্ন। স্বরাষ্ট্র সচিব জানান, করোনা হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা, অক্সিজেনের জোগান এবং সুরক্ষিত বাড়ির সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যভবনের তরফে ইন্টিগ্রেটেড হেল্পলাইন চালু করা হচ্ছে। নম্বরগুলি হল - ১৮০০৩১৩৪৪৪২২২ এবং ০৩৩-২৩৪১২৬০০। সেখানে ফোন করলে একাধিক লাইনে ফোন পাওয়া যাবে। একইসঙ্গে টেলিমেডিসিনের হেল্পলাইন (০৩৩-২৩৫৭৬০০১) এবং অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার (০৩৩-৪০৯০২৯২৯) জন্যও একটি হেল্পলাইন খোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র সচিব। তবে কলকাতায় শুধুমাত্র সেই পরিষেবা মিলবে।নবান্নের তরফে গোষ্ঠী সংক্রমণের স্বীকার করে নেওয়ার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে একযোগে আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধীরা। বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর অভিযোগ, রাজ্য সরকারের উদাসীনতার জন্য গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে। করোনার বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে সাধারণভাবে দেখেছে রাজ্য। তার জেরে সাড়ে চার মাসও পরিকাঠামো গুছিয়ে উঠতে পারেননি রাজ্য সরকার। ফলস্বরূপ ‘আধা সেদ্ধ, আধা পক্ক, আধা ভাজা’ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। একসুরে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা, তথ্য লুকানোর জন্যই গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন। তাঁর পালটা অভিযোগ, কেন্দ্র বিমান পরিষেবা বন্ধ না করায় করোনা ছড়িয়েছে। পাশাপাশি ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল’ ট্রেন চালানো নিয়ে কেন্দ্রের ‘তুঘলকি’ সিদ্ধান্তের ফলে দেশের গ্রামীণ এলাকায় করোনার প্রকোপ বেড়েছে বলে অভিযোগ করেন তৃণমূল সাংসদ।