লাগবে না কোনও মিউটেশন বা জমির রেকর্ড। এবার থেকে স্ব-ঘোষণাপত্র বা সেলফ ডিক্ল্যারেশন দিলেই ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে সেই সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছে রাজ্যের মন্ত্রিসভা।এতদিন জমির উপযুক্ত নথি থাকলে তবেই ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পে আবেদন করা যেত। কিন্তু সেই সংক্রান্ত তথ্য না থাকায় রাজ্য সরকারের সেই প্রকল্পে আবেদন করতে পারতেন না অনেকেই। এবার সেই প্রক্রিয়া আরও সরলীকরণ করা হয়েছে। শুধুমাত্র স্ব-ঘোষণাপত্র দিয়েই ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পে নথিভুক্ত হতে পারবেন কৃষকরা। ইতিমধ্যে সেই মর্মে জেলায় জেলায় নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। তার ফলে রাজ্যের কয়েক লাখ কৃষক উপকৃত হবেন বলে দাবি কৃষি দফতর।সোমবার বোলপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে এক প্রশাসনিক কর্তা জানান, মিউটেশনে দেরি হলে স্ব-ঘোষণাপত্র বা সেলফ ডিক্ল্যারেশনের মাধ্যমে ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের সুবিধা মিলবে। তার ফলে কৃষকদের সুবিধার্থে রাজ্যের সেই প্রকল্পে নথিভুক্তিকরণের গতি আরও বাড়বে। ইতিমধ্যে ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন রাজ্যের ৫২ লাখ কৃষক। যে ২০ লাখ কৃষক এখনও প্রকল্পের আওতায় আসেননি, নিয়ম সরলীকরণের ফলে তাঁদের অধিকাংশই ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে আবেদন জানাবেন বলে আশাপ্রকাশ করেছেন ওই প্রশাসনিক কর্তা। যদিও ‘কৃষকবন্ধু’-র সরলীকরণ নিয়ে যথারীতি রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বিজেপির দাবি, আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে কৃষকদের মন পাওয়ার চেষ্টা করছে মমতা সরকার। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, সেই সরলীকরণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। বরং কৃষকদের স্বার্থে সেই পদক্ষেপ করা হয়েছে। রাজ্যে কৃষকদের উন্নয়ন দেখে বিজেপির হিংসা হচ্ছে বলে দাবি করেছে ঘাসফুল শিবির।এদিকে সোমবার বোলপুরের সভায় রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে ‘কৃষকবন্ধু’-র আওতার আসার জন্য ২.৮২ লাখ আবেদন জমা পড়েছে। তার মধ্যে ২.২৪ লাখ কৃষকের কাছে ইতিমধ্যে সেই প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বীরভূমেও অধিকাংশ আবেদন মঞ্জুর হয়ে গিয়েছে। ১১,৮৩৩ জন আবেদনকারীর মধ্যে ইতিমধ্যে প্রকল্পের আওতায় এসে গিয়েছেন ১১,৩১৯। রাজ্য প্রশাসনের বক্তব্য, নিয়মে সরলীকরণ হওয়ায় আগামিদিনে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির শিবিরগুলিতে বাড়তি আধিকারিক রাখা হচ্ছে।