শত প্রতিবন্ধকতা অগ্রাহ্য করে আদিবাসী গ্রামের প্রথম শিক্ষার্থী হিসেবে গৌরী হেমব্রম মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হল। এই খবরই এখন সংবাদ শিরোনামে। এর আগে এই গ্রামের কোন ছেলেমেয়েই মাধ্যমিক পরীক্ষার গণ্ডি টপকাতে পারেনি, তাই গ্রামবাসীরাও উচ্ছ্বসিত গৌরীর সাফল্যে। বহু পড়ুয়ার কাছে গৌরী এখন অনুপ্রেরণা। শান্তিনিকেতন থানার রূপপুর পঞ্চায়েতের খেলেডাঙা নামোপাড়া আদিবাসী অধ্যুষিত একটি প্রান্তিক গ্রাম। প্রায় ৩০টি পরিবারের বাস সেখানে, জনসংখ্🍃যা সব মিলিয়ে ১০০-১২০ জনের কাছাকাছি। এই গ্রামের উন্নয়ন নিয়ে বহুদিন ধরেই বহু অভিযোগ রয়েছে গ্রামবাসীদের। আবাস যোজনার বাড়ি থেকে শুরু করে পাকা রাস্তা, কোনও কিছুই হয়নি এই গ্রামে। শিক্ষার অবস্থাও বেশ বেহাল এখানে। কোনও স্কুল না কলেজের উপস্থিতিও চোখে পড়ে না এই গ্রামে।
গৌরীর বাবা রামবাবু হেমব্রম দিনমজুরির কাজ করে সংসার টানেন কোনও ভাবে। চারজনের পরিবারে এছাড়া রয়েছে গৌরীর মা মিতালী দেবী এবং দাদা মহাদেব হেমব্রম। মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্য জুড়ে প্রথম- দ্বিতীয় স্থানাধিকারীদের তালিকা পেরিয়ে আরও বৃহত্তর গৌরীর এই লড়াই, সাফল্য। গ্রামের লোকেদের তাক লাগিয়ে দিয়েছে বিনুড়িয়া সুমিত্রা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী গৌরী। কেবলই লেখাপড়া করে দিন কাটা না গৌরীর মত মেয়েদের। কখনও ১০০ দিনের প্রকল্পে মাটি কাটার কাজ, কখনও ধান পোঁতার কাজ করেছে সে। এরই পাশাপাশি নিজের পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে গৌরী। তবে মাধ্যমিক পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হতে গৌরীর পাশে ছিল বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা এবং এক😼জন গৃহ শ😼িক্ষিকা। গৌরী তার স্কুলের শিক্ষিকা এবং গৃহ শিক্ষিকার অবদান বলতে ভোলেননি এমন সাফল্যের দিনে।
গৌরীর কথায়, 'তাঁরা না-থাকলে আমি এতদূর পৌঁছতে পারতাম না। আজ সꦆত্যিই খুব ভালো লাগছে। বড় হয়ে আমি এই গ্রামের মানুষের সেবা করতে চাই।' এছাড়া গৌরীর মা মিতালী দেবী জানান, তারা কোনদিনও ভাবতে পারেননি গৌরী মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে। গোটা পরিবার এবং প্রতিবেশীরাও খুশি তার সাফল্যে। আদিবাসী কন্যা গৌরীর মাধ্যমিক পরীক্ষার সাফল্যে। গৌরীর বাবা বাবুরাম আক্ষেপের সুরে বলেন, বেশ কিছু বছর আগꦯে ছেলে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল, কিন্তু পাশ করেতে পারেনি সে। এবার বাবুরামের সেই আক্ষেপ মিটল গৌরির সাফল্যে। আদিবাসী কন্যার সাফল্যে বিনুড়িয়া সুমিত্রা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অদিতি মজুমদারও খুশি। তার এই চেষ্টাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অদিতি দেবী।