বাঙালি নন, তবে হাথরাসের তরুণীর সঙ্গে বাংলার নিবিড় যোগ আছে। আসলে আসানসোলের বার্নপুর ইস্পাত কারখানায় তরুণীর পরিবার একসময়ে কাজ করত। তরুণীর বাবা, ঠাকুরদা কর্মসূত্রে দীর্ঘকাল ছিলেন আসানসোলের বাসিন্দা।বার্নপুর ইস্পাত কারখানায় কাজ করতেন ঠাকুরদা। এখন তাঁদের বাস উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে হলেও প্রাক্তন কর্মীর পরিবারের মেয়ের উপর এরকম নৃশংস অত্যাচারের খবরে শিউরে উঠছেন বার্নপুরবাসী। ফুঁসছেন ক্ষোভে। তাঁদের আবেগ একটু বেশিই। কারণ তরুণী আসলে ঘরের মেয়ে। জানা গিয়েছে, হাথরাসের তরুণীর ঠাকুরদা বার্নপুর ইস্পাত কারখানার সেনেটারি বিভাগের কর্মী ছিলেন। এখানেই থাকতেন তরুণীর বাবাও। তাঁর ছাত্র ও যৌবন কেটেছে শিল্পশহরে। বিয়েও হয়েছিল এখান থেকেই। এখনও বার্নপুর জুড়ে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছেন হাথরাসের পরিবারের সদস্যরা। কেউ মৃত যুবতীর সম্পর্কে কাকা, কেউ বা মৃতের বাবার মামাতো ভাই। সেই পরিবারের সদস্যরা জানালেন, পশ্চিমবঙ্গে তাঁরা অনেক সুরক্ষিত। কারণ এখানে কোনও জাতপাতের রাজনীতি নেই।প্রথমে তাঁরা থাকতেন নিউটাউনের সুইপার কোয়ার্টারে। পরে চলে এসেছিলেন বার্নপুরের রাঙাপাড়ায়। তরুণীর বাবা বার্নপুর বয়েজ স্কুলের ছাত্র ছিলেন। পড়াশোনা শেষ করে বিয়েও হয়েছে বার্নপুর থেকে। ১৯৯৯ সালে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে ওই পরিবারের সদস্যরা বার্নপুর থেকে চলে গিয়েছিলেন।সম্পর্কে তরুণীর কাকা হন বার্নপুরের ইসকো কারখানার কর্মী বরুণের (নাম পরিবর্তিত)। তিনি বলেন, ‘আমরা দুই ভাই একসঙ্গে পড়াশোনা করেছি। আমাদের যোগযোগও রয়েছে। গত বছর ওর (তরুণীর) বাবা বার্নপুর কারখানার বকেয়া টাকা পাওয়ার জন্য এখানে এসেছিলেন। আমার বাড়িতেই ছিলেন। সামান্য ওই টাকা পেয়ে তিনি খুশি হয়ে বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। এই ঘটনায় আমরা খুব মর্মাহত। পশ্চিমবঙ্গের মত সুরক্ষিত অন্য কোনও রাজ্য নয়। এখানে উঁচু–নীচু, জাতপাত হয় না।’