করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তেই লোকাল ট্রেনের উপর কোপ পড়ল। পুরোপুরি লোকাল ট্রেন পরিষেবা বন্ধ না করা হলেও রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হল, সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চলবে। তারপর মিলবে না লোকাল ট্রেনের পরিষেবা। বাকি সময় ৫০ শতাংশ যাত্রী ট্রেনে উঠতে পারবেন। রবিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আগামিকাল (৩ জানুয়ারি) থেকে একাধিক বিধিনিষেধ কার্যকর হতে চলেছে। করোনার সংক্রমণ রুখতে সন্ধ্যা সাতটার পর থেকে লোকাল ট্রেন চলবে না। দিনের যে সময় লোকাল ট্রেন চলবে, সেই সময় সর্বাধিক ৫০ শতাংশ যাত্রী ট্রেনে উঠতে পারবেন। বাস এবং জলপথ পরিবহন অবশ্য চালু থাকবে। তাতে কোনওরকম বিধিনিষেধ চাপানো হয়নি।তবে সেই সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। সন্ধ্যা সাতটা বাজলেই পুরো পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাবে নাকি প্রান্তিক স্টেশন থেকে সন্ধ্যা সাতটায় শেষ ট্রেন ছাড়বে, সে বিষয়ে রাজ্য বা রেলের তরফে এখনও সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি। পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রে খবর, আপাতত রাজ্যের চিঠির অপেক্ষা করা হচ্ছে। তারপরই পুরো বিষয়টা স্পষ্ট হবে। ঠিক করা হবে নয়া সময়সূচি।তারইমধ্যে লোকাল ট্রেন নিয়ে রাজ্যের বিধিনিষেধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে নিত্যযাত্রীরা। শিয়ালদহ স্টেশনে এক যাত্রীর প্রশ্ন, সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চললে কীভাবে অফিসযাত্রীরা বাড়ি ফিরবেন? যাঁরা অফিসে যাবেন, তাঁদের কি রোজ বিকেল চারটে-পাঁচটার মধ্যে ছুটি দিয়ে দেওয়া হবে? সেইসঙ্গে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে ট্রেন চালানোর নিয়মও কতটা পালন করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরে রাজ্যে লাগামহীনভাবে বেড়েছে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা। শনিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৪,৫১২ জন করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। সংক্রণের হার ১২ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। যা কিনা পাঁচ শতাংশের নীচে থাকা অত্যন্ত জরুরি। তাও নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা এখনও কম আছে। পরীক্ষার সংখ্যা বাড়লে আক্রান্তের ছবিটা আরও স্পষ্ট হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সবথেকে বেশি উদ্বেগ বাড়িয়েছে কলকাতা। শেষ ২৪ ঘণ্টায় শুধু কলকাতায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২,৩৯৮ জন। সঙ্গে যোগ হয়েছে ওমিক্রনের আতঙ্ক।