‘নয়া ক্লাসের’ শুরুতেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন কড়া ‘হেডমিস্ট্রেস’ তিনি। ‘পড়ুয়ারা’ ভুল করলে বকুনিও পড়বে। সেই হুঁশিয়ারিতে কোনও হেরফের হল না। বরং 'ভুলের' জন্য ‘হেডমিস্ট্রেস’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোপের মুখে পড়লেন তিন মন্ত্রী - সৌমেন মহাপাত্র, অরূপ রায় এবং মলয় ঘটক। নবান্ন সূত্রে এমনই খবর মিলেছে। বুধবার নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠকে একেবারে ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ ভূমিকায় ছিলেন মমতা। দুর্নীতি, গাফিলতি এবং গড়িমসি যে কোনওরকমভাবে বরদাস্ত করবেন না, তা আবারও বুঝিয়ে দেন। সূত্রের খবর, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ভারী বৃষ্টির জেরে যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে বিভিন্ন বিষয় জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এবং বন্যায় যে বাঁধগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তা নিয়ে সেচমন্ত্রী সৌমেনকে একটি বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করতে বলেছিলেন। সে বিষয়ে বুধবার জানতে চান। কিন্তু সেই রিপোর্ট নিয়ে দিল্লিতে দরবাবের যে নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা, তা পালন করতে না পারায় কড়া বকুনি খেতে হয় সৌমেনকে। সূত্রের খবর, মমতা বলেন যে ‘১০ দিন আগে দিল্লিতে যেতে বলেছিলাম। কেন দিল্লিতে এখনও গিয়ে উঠতে পারনি?’ সৌমেনের বকুনির পর সমবায়মন্ত্রী অরূপকে চেপে ধরেন মমতা। সূত্রের খবর, সমবায় ব্যাঙ্ক অডিট হচ্ছে না কেন, তা নিয়ে মমতার কড়া ধ্যাতানির মুখে পড়তে হয় অরূপকে। মমতার রণংদেহী মেজাজের সামনে চুপ করে যান মন্ত্রী। তবে চুপ করে থাকেননি মমতা। বরং কলকাতা হাইকোর্টে জুডিশিয়াল মিউজিয়াম তৈরির ক্ষেত্রে গড়িমসির জন্য আইনমন্ত্রী মলয়কে মমতা বকুনির মুখে পড়তে হয়। তবে শুধু বর্তমান মন্ত্রীরা নন, সূত্রের দাবি যে প্রশাসনিক বৈঠকে প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের আমলে লাগামহীন খরচ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা। রবীন্দ্রনাথের আমলে পরিকল্পনা-বহির্ভূত খরচ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যে দফতর এবার নিজের হাতেই রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী।