পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় গত কয়েক নির্বাচনে বেশ ভালো ফল করꩵে এসেছে বিজেপি। লোকসভা নির্বাচনের পর অবশ্য বিধানসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহল এলাকায় পায়ের তলায় জমি কিছুটা হলেও ফিরে পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এরই মাঝে অবশ্য শুরু হয়েছে কুড়মিদের আন্দোলন। এই আন্দোলনের মাঝেই 'সেম সাইড গোল' মেরে বসেছেন দিলীপ ঘোষ। আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে সম্প্রতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, 'বেশি বাড়াবাড়ি করলে আমি কাপড় খুলে নেব।' এদিকে তাঁর এই মন্তব্যের পরই কুড়মিরা বেজায় খাপ্পা দিলীপ ও বিজেপির ওপর। আর এই ফাঁকেই কুড়মিদꦗের নিয়ে নবান্নে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে কুড়মিদের কথা শুনে অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরই মত, আগামী পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনে কুড়মি ভোটের সিংহভাগ আসতে পারে তৃণমূলের ঝুলিতে।
বুধবার জঙ্গলমহলের কয়েকজন তৃণমূল বিধায়ক এবং কুড়মি সংগঠনের তিন নেতার সঙ্গে নবান্নে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে কুড়মি নেতারা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের দাবিদাওয়াগুলির প্রতি সহানুভূতিশীল। মমতা নাকি বৈঠকে কুড়মি নেতাদের জানিয়েছেন, কেন্দ্রকে তাঁদের দাবির কথা জানিয়ে বেশ কয়েকবার চিঠি লিখেছেন তিনি। এতেই মনে হচ্ছে যে রাজ্য সরকারের প্রতি কুড়মিদের মনোভাব কিছুটা হলেও নরম হয়েছে। অপ꧒রদিকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ওপর তাঁদের ক্ষোভ বাড়ছে। এরই মাঝে সম্প্রতি দিলীপ ঘ🏅োষের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বিজেপির জেলা কার্যালয়ও ভাঙচুর করেছে কুড়মি সংগঠন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোট থেকেই বিজেপির প্রভাব বিস্তার হয়েছিল পশ্চিমের জেলাগুলিতে। আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে ভালো ফল করেছিলে গেরুয়া শিবির। সেই সাফল্য লোকসভা ভোটেও ধরে রাখে দল। তবে দিলীপ ঘোষের মন্তব্যে সেই সমর্থনে ভাটা পড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিজেপির অন্দরেই। এই আবহে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন কুড়মিদের থেকে। এদিকে সদ্য সমাপ্ত কর্ণাটক নির্বাচনে আদিবাসীরা বিজেপিকে খালি হাতে ফিরিয়েছে। গোটা দেশের কাছে বিজেপি বিরোধী শক্তির জন্য কর্ণাটকের ফল একটা বড় 'অনুপ্রেরণা'। এই আবহে সেই রাজ্যের ভোটের ফলাফল এবং দিলীওপের 'সাহায্য'কে হাতিয়ার করে ময়দানে নেমে পড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। গতবছর গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনেও আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় বড় জয়লাভ করেছিল বিজেপি। দেশের আদিবাসীদের নিজেদের দিকে টানতে রাষ্ট্রপতি পদেও আদিসাবী সম্প্রদায়ের নেত্রীকে বসায় বিজেপি। তবে কর্ণাটকের আদিবাসীরা ২০২৩ সালে খালি হাতে ফেরাল বিজেপিকে। কর্ণাটকে তফসিলি উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত একটি আসনেও বিজেপি এবার জিততে পারেনি। যা গেরুয়া শিবিরের জন্য এর বড় চিন্তার কারণ হতে পারে। এবছরই আবার ছত্তিশগড়ে নির্বাচন রয়েছে। সেখানে সরকার গঠনের ক্ষেত্রে আদিবাসী ভোটারদের প্রভাব অনেকটাই। আর বাংলার পঞ্চায়েত ভোট এবং আগামী বছরের লোকসভা ভোটে আদিবাসীদের সমর্থন না পেলে বিজেপি এরাজ্যে মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। এবং সেই সুযোগ বুঝেই এবার ছক কষছেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো।