𝔍 একদিকে নাগাড়ে বৃষ্টি অপরদিকে ডিভিসির জল ছাড়ার যৌথ কর্মকাণ্ডে বন্যাকবলিত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি। এই অভিযোগ আগেই তুলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই গ্রামগুলিতে পরিদর্শনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ত্রাণ নিয়ে কোনও অভিযোগ এলে বরদাস্ত করবে না রাজ্য সরকার। গরিব মানুষের পাশে থাকতে হবে। দুর্গাপুজো বলে সরে যাওয়া যাবে না। অথচ সেই ত্রাণ বিলি করার ঘটনায় গরমিল রয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। মেমারি পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন বিষয়ীর পাড়ার দুর্গাপুজোর পুজোমণ্ডপ তৈরি হচ্ছে বন্যা ত্রাণের ত্রিপলে বলে অভিযোগ। আর তা প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলায়।
🐈এই ঘটনা নিয়ে এখন প্রবল চাপে রয়েছেন মেমারি পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন বিষয়ী। কারণ তৃণমূল কংগ্রেসের কাছেও এই খবর গিয়ে পৌঁছেছে। দল এই বিষয়ে অ্যাকশন নিতেই পারে। জেলার নেতারা তেমনই আলোচনা করছেন। তার উপর এই ঘটনা জেনে গিয়েছে বিরোধীরা। এমন সুযোগ তাঁরা ছাড়তে নারাজ। আর তাই জেলা সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যয় বলেন, ‘এটাও তো চুরি। জেলা প্রশাসন কেন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এফআইআর করছে না?’ পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানির বক্তব্য, ‘এটা করা যায় না। আমি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।’
আরও পড়ুন: ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করার পরও অজুহাত সিভিক ভলান্টিয়ারের, পাথরপ্রতিমায় গ্রেফতার
এই ঘটনা ঘটিয়ে স্বপন বিষয়ী যে ফেঁসে যাবেন সেটা তিনি নিজেও কল্পনা করেননি। এই স্বপন বিষয়ীর ডাকে বাঘে–হরিণে একঘাটে জল খায় বলে সূত্রের খবর। শনিবার সকালে দেখা গেল, মেমারির নিউ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মধ্য মেমারি সর্বজনীন দুর্গোৎসবের মণ্ডপ ঘেরা হয়েছে ত্রাণের ত্রিপলে।🍸 সেটা বোঝা যায় যেহেতু রাজ্য সরকারের লোগো লাগানো ছিল সরকারি ত্রাণের ত্রিপলে। এই দুর্গাপুজো কমিটির সম্পাদক স্বয়ং স্বপন বিষয়ী। যিনি মেমারি পুরসভার চেয়ারম্যান। ত্রাণের ত্রিপলে প্যান্ডেল কেন? এই দুর্গাপুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ গৌতম নন্দীর সাফাই, ‘আমাদের একদম সাধারণ দুর্গাপুজো। কোনও থিম নেই। ৮ বছর বয়স। তবে প্যান্ডেলে সরকারি ত্রাণের ত্রিপল কেন ব্যবহার করা হয়েছে সেটা আমি কিছু বলতে পারব না।’
💙এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই এলাকায় ফিসফাস শুরু হয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা অশোক নন্দীর অভিযোগ, ‘বহুদিন ধরেই বাড়তি সুবিধা পেয়ে আসছে চেয়ারম্যানের দুর্গাপুজো। পুরসভার ঝাড়ুদাররা মণ্ডপ পরিষ্কার করে। ব্লিচিং ছড়ায়।’ পুরসভা এলাকার আর এক বাসিন্দা খুদি বিবির কথায়, ‘আমরা ত্রিপল চাইতে বারবার গিয়েছি পুরসভায়। ত্রিপল পায়নি। এখন সবাই দেখুন, কত ভাল কাজ করছেন আমাদের পুরপ্রধান।’ মেমারি বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক মধুসূদন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, ‘এই কাজ হয়ে থাকলে খুবই অন্যায় হয়েছে। গরিব মানুষের জন্য সরকারি ত্রিপল। সেটা দুর্গাপুজো মণ্ডপে ব্যবহার করা উচিত হয়নি।’