জোর করে বিয়ের পিঁড়িতে বস♍াতে চেয়েছিলেন বাবা-মা। তবে প্রথম থেকেই বিয়েতে আপত্তি ছিল কিশোরীর। শেষ পর্যন্ত পাত্রস্থ হওয়ার আগেই কিশোরী সরাসরি বিডিওকে ফোন করে নিজের বিয়ে আটকাল। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার। এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। কিশোরীর এমন সাহসিকতায় মুগ্ধ অনেকেই।
আরও পড়ুন: ভারতে প্রতি মিনিটে বাধ্য হয়ে বিয়ের পিঁড়ি🅠তে বসেন ৩ নাবালিকা! মর্মান্তিক রিপোর্ট
জানা গিয়েছে, চন্দ্রকোনার একটি কৃষক পরিবারের কন্যা ওই কিশোরী বর্তমানে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া। পলাশচাপড়ি নিগমানন্দ উচ্চ বিদ্যালয় পড়াশোনা করে সে। বাড়ি চন্দ্রকোনা দু'নম্বর ব্লকে । তার বয়স এখন ১৭ বছর। কিশোরীর ইচ্ছে এখন বিয়ে না করে পড়াশনা চালিয়ে যাওয়া। কিন্তু, তার বাবা-মা চাইছিলেন মেয়ের বিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত হতে। এর আগে একাধিক পাত্র দেখেছেন কিশোরীর বাবা-মা। কিন্তু, প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজের অমত প্রকাশ করেছে সে। তবে শেষবারে 🍸আর বিয়েতে আপত্তি জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এক প্রকার জোর করেই তাকে বিয়ে দিচ্ছিলেন বাবা-মা। আর এর জন্য তাকে সোজা পিসির বাড়িতে নিয়ে যান তারা। সিদ্ধান্ত হয়েছিল সেখান থেকেই কিশোরীর বিয়ে দেওয়া হবে।
জানা যায়, শনিবার হঠাৎ পরিবারের সদস্যরা কিশোরীকে চন্দ্রকোনা থেকে ঘাটালে তার পিসির আত্মীয়র বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে সোনা কারিগর এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। সেই মতোই বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বিয়ের কয়েক ঘণ্টা আগেই কিশোরীর চন্দ📖্রকোনার দু'নম্বর ব্লকের বিডিও উৎপল পাইকের ফোন নম্বর জোগাড় করে তাকে ফোন করেন। ফোনে বিডিওর কাছে কিশোরী আর্জি জানিয়ে বলে, ‘স্যার কিছু করুন, আমার বিয়ে আটকান।’ আর ফোন পাওয়া মাত্রই বিয়ের ঘণ্টা খানেক আগেই প๊ুলিশ নিয়ে বিয়ে বাড়িতে পৌঁছন বিডিও। এরপর তিনি নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করেন। মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত যে বিয়ে দেওয়া যাবে না সে নিয়ে বাবার কাছ থেকে মুছলেখা লিখিয়ে নেন বিডিও। এ বিষয়ে বিডিও জানান, মেয়েটি নিজেই তাকে ফোন করে আর্জি জানিয়েছিল যে তার বিয়ে যেন আটকানো হয় না হলে তার বাড়ি থেকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হবে। বিডিওকে কিশোরী জানিয়েছিল, সে এখন বিয়ে করতে চাই না। পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই।
প্রসঙ্গত, দেশে বাল্যবিবাহ একটি বড় সমস্যা। বিভিন্ন সমীক্ষায় এ নিয়ে উদ্বেগজনক ছবি সামনে এসেছে। আর বাল্যবিবাহের দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলা। যদিও বাল্যবিবাহ রোধে রাজ্যের তরফে অনেক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তারপরেও দূর করা যায়নি এই সামাজিক ব্যাধি। সাধারণত পুলিশ, বিডিও, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা পঞ্চায়েত বাল্যবিবাহ রোধে পদক্ষেপ করে থাকে। তবে সম্প্রতি বাল্যবিবাহ রুখতে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ব্লকের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট অফিসারদের। এই সমস্ত অফিসারদের চাইল্ড ম্যারেজ প্রহিবিশন অফিসার করা হয়েছে। তারা বাল্য বিবাহ রোধে ব্যবস্থ𒈔া নেবেন।