নিমতিতা বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তে নামল ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি(এনআইএ)। বুধবার দুপুরে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার একটি তদন্তকারি দল মুর্শিদাবাদে যায়। সেখানে পৌঁছে প্রথমে তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।তারপর সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহও করেন। তারপর স্থানীয় থানার সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারি আধিকারিকেরা।তবে নিমতিতায় আসা এনআইএ দলের কোনও সদস্য সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি।এনআইএ দলের সঙ্গে থাকা স্থানীয় থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, জেএমবি যোগসূত্রের কথা উড়িয়ে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। রাজ্য পুলিশের একাংশ আধিকারিক সন্দেহ করছেন, জেএমবি—র জঙ্গিরা ওই বোমা যাত্রীবাহী ট্রেনে নাশকতা চালাতেই স্টেশনে এনেছিল।যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সিআইডি—সহ রাজ্যের তিনটি তদন্তকারি সংস্থার ওপর ভরসা রেখেছেন। তবে বিজেপি ও কংগ্রেস কেন্দ্রীয় তদন্তকারি সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করার দাবি তুলেছে।চলতি মাসের ১০ ফেব্রুয়ারি কলকাতার এনআইএ—র বিশেষ আদালত খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত কৌসরকে ২৭ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে। ২০১৮ সালে বেঙ্গালুরুর একটি গেস্ট হাউস থেকে কৌসরকে গ্রেফতার করে এনআইএ। ২০১৮ সালে সে বোধগয়ার বিস্ফোরণ কাণ্ডেও যুক্ত ছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। সেবছরেই অক্টোবর মাসে পশ্চিম বর্ধমান জেলার খাগড়াগড়ের একটি ভাড়াবাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। তদন্তে উঠে আসে, জামাত—উল—মুজাহিদ্দিন বাংলাদেশ (জেএমবি) জঙ্গিরা ওই দোতলা বাড়িতে বোমা তৈরি করছিল। সেই সময় তা ফেটে দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই দুই জঙ্গির মৃত্যু হয়। এই বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তে নেমে বড় ধরনের নাশকতার খোঁজ পান তদন্তকারিরা। এই ঘটনায় দেশজুড়ে নাশকতার ছক বানচাল হয়ে যায় জঙ্গিদের। তদন্তে নেমে জেএমবি ভারতের তৃতীয ইউনিট চালানোর দায় কৌসর—সহ মোট ৩০জন জঙ্গিকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গ্রফতার করা হয়।বিগত কয়েক বছরে এনআইএ ও রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে, মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে আল কায়দা জঙ্গি সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করে।ওদিকে সিআইডি নিমতিতা বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্তে নেমে দু’জন সন্দেহভাজন আবু সামাদ ও সইদুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে।বর্তমানে দু’জনই পুলিশ হেপাজতে রয়েছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিআইডি আধিকারিক দাবি করেছেন যে, জেরায় ক্রুড বোমা বানাতে ওস্তাদ সইদুল স্বীকার করে নিয়েছে যে, মন্ত্রী জাকির হোসেনের সঙ্গে পুরনো শত্রুতার জেরেই ওই বোমা স্টেশনে রেখেছিল। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে আরেক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই বোমার পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, সেগুলো উন্নতমানের সকেট বোমা। তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকজন স্থানীয় দুষ্কৃতীরা এই ধরনের বোমা বানাতে অভিজ্ঞ।তাদের মধ্যে কয়েকজনের জেএমবি যোগও রয়েছে।’