করোনা মোকাবিলায় রাজ্যে বিধিনিষেধ জারি করেছে সরকার। রাত্রিকালীন বিধিনিষেধ জারি থাকছে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত। সেই কারণে প্রথম ট্রেন পরিষেবা মিলছে সকাল পাঁচটা থেকে। তার আগের ট্রেনগুলো বাতিল থাকছে। তার জেরে ব্যাপক সমস্যায় পড়ছেন যাত্রীরা। বিশেষ করে সবজি,ফুলের ব্যবসায়ীরা ব্যাপক সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। এরই প্রতিবাদে ক্যানিং এবং বনগাঁ লাইনে বিক্ষোভ অবরোধ করলেন যাত্রীরা। তাঁদের দাবি, প্রথম এবং দ্বিতীয় ট্রেন চালাতে হবে। সঙ্গে তাঁদের প্রশ্ন, 'করোনা কি শুধু প্রথম ২ ট্রেনেই হয়?' আজ বুধবার সকালে ক্যানিং লাইনে তালদি স্টেশনে লাইনের উপর লোহার পাত রেখে এবং রেল লাইনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখান যাত্রীরা। এর ফলে ওই রুটে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে অবরোধ ওঠানোর চেষ্টা করে আরপিএফ এবং জিআরপি। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ক্যানিং লাইনের প্রথম ট্রেনে করে যেমন বহু সবজি ব্যবসায়ী কলকাতায় আসেন। তেমনই পরিচারিক এবং বহু মানুষ কলকাতায় কাজে আসেন।তাঁদের বক্তব্য, 'ক্যানিং থেকে শিয়ালদাগামী প্রথম আপ ট্রেন ৩:৫২ মিনিটে ছাড়ে। এই ট্রেনে করে আমরা বহু মানুষ কাজে যাই। দীর্ঘ লকডাউন থাকার কারণে এমনিতেই আমাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ। তার উপর এখন কাজে যেতে না পারলে কীভাবে আমাদের পেট চলবে? মালিক তো আর শুনবেন না যে ট্রেন চলছে না। আমাদের টাকাও দেবে না। কলকাতা যাওয়ার জন্য ট্রেনই আমাদের ভরসা।' সেক্ষেত্রে ট্রেন না চললে তাঁদের আর্থিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনও পর্যন্ত অবরোধ ওঠেনি।অন্যদিকে, শিয়ালদহ-বনগাঁ লাইনে ঠাকুরনগর স্টেশনেও প্রথম এবং দ্বিতীয় ট্রেন চালুর দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন যাত্রীরা। তাঁদের বক্তব্য, প্রথম দুটো ট্রেনে করে ফুল ব্যবসায়ীরা কলকাতার বাজারে যান ফুল নিয়ে। প্রথম দুটি ট্রেনে করে কলকাতার বাজারে না গেলে ব্যবসা ঠিকমতো জমে না। দীর্ঘ লকডাউন থাকার পর একটু-একটু করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল তাঁদের ব্যবসা। তবে প্রথম দুটি ট্রেন বাতিল করার ফলে তাঁরা চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। অনেক মহিলা ব্যবসায়ীকে এদিন কাঁদতেও দেখা যায়। তাঁদের বক্তব্য, 'অনেক ট্রেন রয়েছে যেগুলি বাতিল করা যায়। তাহলে সেক্ষেত্রে প্রথম দুটি ট্রেন কেন বাতিল করা হল? আমাদের পেট চলবে কীভাবে? আমরা গরীব হলেও তো মানুষ। প্রথম এবং দ্বিতীয় ট্রেন না আসলে প্রায় ১০ হাজার মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাবেন।' প্রথম দুটি ট্রেন চালানোর দাবিতে রাত দুটো থেকেই রেললাইনে ফুল রেখে সেখানে অবরোধ করেন যাত্রীরা।