পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি কিংবা সামাজিক জীবনে দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় উত্তরবঙ্গ বরাবরই ব্রাত্য থেকেছে। শাসকবিরোধী লড়াইয়ের বাইরেও একথা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। সেই কারণেই দীর্ঘদিন ধরে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজগুলির কর্তৃপক্ষ এবং ছাত্রছাত্রীদের দাবি ছিল উত্তরবঙ্গের জন্য কিছুটা বরাদ্দ বৃদ্ধির। এবার বেতন বহির্ভূতভাবে রাজ্যের তরফে বরাদ্দ পেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু অংশ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বেতন বহির্ভূত খাতে ত্রৈমাসিকে খরচের যা চাহিদা, অক্টোবর-ডিসেম্বর এই সময়কালের জন্য তার চেয়ে অনেক কম বরাদ্দ মেলায় ক্ষোভ জন্মাচ্ছিল। অস্থায়ী কর্মীদের বেতন থেকে ল্যাবরেটরির সরঞ্জাম কেনার মত নানা খরচ ওই টাকা থেকেই করতে হয়।শিক্ষা দফতরের তরফে এবার উত্তরবঙ্গের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও কিছু অর্থ বরাদ্দ করা হল সে কারণে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খুশি। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়কে অক্টোবর-ডিসেম্বর এই মাসিকের খরচ হিসেবে আরও ১ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। এই খাতে তাদের ত্রৈমাসিকের খরচ আড়াই কোটির মত। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফ থেকে কিছুদিন আগেই তাদের ৮০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। এরপরে দ্বিতীয়বারের জন্য সহযোগিতা পেয়ে আপাতত সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছে উত্তরবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। রাজ্যের শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানান, ত্রৈমাসিক খরচের কিছুটা বরাদ্দ প্রথম দফায় দেওয়ার পরে জানান হয়েছিল সেই টাকা খরচের হিসাব সঠিকভাবে দিতে পারলে আরও বরাদ্দ করা হবে। তবে অপ্রয়োজনীয় কোনও খরচ করা যাবে না বলে স্পষ্ট নির্দেশ ছিল।দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয় রাজ্যের তরফে। সরকারি বিভিন্ন নথিপত্র তারা পেয়েছে। খুব দ্রুতই সেই টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ঢুকে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই তিন মাসে তাদের খরচ অন্তত ৩৫ লক্ষ টাকা কিভাবে আসবে, তা নিয়ে এখনও তারা জানেন না। অন্যদিকে আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খরচের ‘ইউটিলিজেশন সার্টিফিকেট’ এখনও পাঠাতে পারেনি। ফের বরাদ্দ পেতে ওই নথিপত্র পাঠানোর জন্য ব্যস্ত তারা। এছাড়া রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় ত্রৈমাসিকে ১৫ লক্ষ টাকা পেলেও তারা আরও বেশ কিছু টাকার দাবি জানিয়েছে রাজ্য সরকারকে। আর্থিক সংকট প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার স্বপন রক্ষিত জানান, ‘টাকা আসার ফলে ব্যয় সংকোচনের বিষয়টি তুলে নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।’ অন্যদিকে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, তাদের আরও কিছু টাকা প্রয়োজন, উচ্চশিক্ষা দফতরে তা জানান হয়েছে। আশা করছেন এর ফলাফলও তারা পাবেন।