𒀰 বাংলাদেশ সীমান্তে উর্দু, আরবি ভাষায় সন্দেহজনক সিগন্যাল ধরা পড়ল। আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মাসদুয়েক ধরে রাতের দিকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় সেরকম সিগন্যালের হদিশ পেয়েছেন অপেশাদার হ্যাম রেডিয়োর অপারেটররা। বাংলা (বাংলাদেশি টানে), উর্দু এবং আরবিতে সাংকেতিক ভাষায় সেইসব সিগন্যাল ধরা পড়ায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। বিশেষত বাংলাদেশে এখন যা অবস্থা এবং একাংশের মধ্যে ভারত-বিরোধী যে মনোভাব তৈরি হয়েছে, সেই পরিস্থিতিতে সাংকেতিক ভাষায় ওইসব সন্দেহজনক সিগন্যাল ধরা পড়ায় জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে বিষয়টি জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। করা হয়েছে সতর্ক।
🎐ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে সেই সাংকেতিক ভাষায় সিগন্যালের বিষয়টি সামনে এসেছে। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট ও বনগাঁও এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন এলাকায় সাংকেতিক ভাষায় বাংলা, উর্দু ও আরবি এরকম অনুমোদনহীন সিগন্যালের হদিশ মিলেছে। তড়িঘড়ি তা জানানো হয় কেন্দ্রীয় সরকারকে। তারপর ট্র্যাকিংয়ের জন্য বিষয়টি পাঠানো হয়েছে কলকাতায় ইন্টারন্যাশনাল মনিটরিং স্টেশনের (রেডিয়ো) কাছে। ভবিষ্যতে আবারও এরকম সিগন্যালের হদিশ মিললে তা অবিলম্বে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
'রাত ১ টা থেকে রাত ৩ টের মধ্যে সন্দেহজনক সিগন্যাল'
🌄বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ রেডিয়ো ক্লাবের এক শীর্ষ পদাধিকারী (নাম প্রকাশ করা হল না) বলেছেন, ‘রাত একটা থেকে রাত তিনটের মধ্যে সেই সন্দেহজনক সিগন্যাল ধরা পড়েছে। মূলত বাংলা (বাংলাদেশি ধাঁচে কথা), উর্দু ও আরবি ভাষায় সেই সাংকেতিক বার্তা ছিল। কখনও কখনও এমন কোনও ভাষায় সিগন্যাল ধরা পড়েছে, যেটা আমরা বুঝতে পারিনি। যখনই আমরা ওই লোকজনকে নিজেদের পরিচিতি দিতে বলেছি, তখনই ওরা চুপ করে গিয়েছে।’
সোদপুরে প্রথম ওরকম সিগন্যাল ধরা পড়েছিল
ﷺপিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ রেডিয়ো ক্লাবের ওই পদাধিকারী জানিয়েছেন যে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরে প্রথমবার সেরকম সিগন্যাল ধরা পড়েছিল। তাঁর কথায়, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা তেমন গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু তারপর একইরকম সিগন্যাল ধরা পড়েছে বসিরহাট, বনগাঁ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকেও। জানুয়ারির মাঝামাঝি যখন গঙ্গাসাগর মেলা হচ্ছিল, তখনও একাধিক হ্যাম রেডিয়ো ব্যবহারকারী এরকম সন্দেহজনক সিগন্যালের হদিশ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।’
⛄কিন্তু কেন ওইসব সিগন্যাল নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করা হচ্ছে, সেটাও ব্যাখ্যা করেছেন পশ্চিমবঙ্গ রেডিয়ো ক্লাবের ওই পদাধিকারী। সংবাদসংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি জানিয়েছেন যে হ্যাম রেডিয়োর ব্যবহাকারীদের ক্ষেত্রে যে বিশ্বব্যাপী নিয়ম আছে, সেটা অনুসরণ করা হচ্ছে না। এরকম ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষকে নিজেদের ‘রেডিয়ো আইডেন্টিফিকেশন কোড’ বা ‘রেডিয়ো কল সাইন’ দিয়ে পরিচয় দিতে হয়। কিন্তু এইসব ঘটনার ক্ষেত্রে পরিচিতি জানতে চাওয়া হলেই সবকিছু স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এরকম সিগন্যাল উদ্বেগের, মত বিএসএফ কর্তার
ღআর সেই পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রেডিয়ো ক্লাবের ওই পদাধিকারীর বাড়িতে এসেছেন ভারতের সুরক্ষা এজেন্সির এক আধিকারিক। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। তবে ভারতীয় সুরক্ষা বাহিনী বিএসএফের তরফে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিএসএফের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, এরকম সিগন্যালের বিষয়টি উদ্বেগের।
♈তিনি জানিয়েছেন যে পাচারকারী এবং জঙ্গি সংগঠনগুলি মাঝেমধ্যেই হ্যাম রেডিয়োর ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে থাকে। কারণ মোবাইল নেটওয়ার্ক বা মোবাইলের তুলনায় হ্যাম রেডিয়োর যোগাযোগের উপরে নজরদারি চালানো কঠিন। আর ২০০২-০৩ সালে যখন এরকম সন্দেহজনক সিগন্যাল ধরা পড়েছিল, তখন অভিযান চালিয়ে ছয় উগ্রপন্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ রেডিয়ো ক্লাবের ওই পদাধিকারী।