তমলুকে সেই পথে হাঁটেননি। তবে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতায় ‘অরাজনৈতিক’ মঞ্চ থেকে দাঁড়িয়ে কার্যত ‘রাজনৈতিক’ মন্তব্য করলেন শুভেন্দু অধিকারী। একইসঙ্গে প্রাক্তন পরিবহনমন্ত্রী ঠারেঠোরে বুঝিয়েও দিলেন যে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সবকিছু ‘ঠিক’ নেই। কোথাও একটা ‘তাল’ কেটে গিয়েছে।বৃহস্পতিবার শহিদ ক্ষুদিরাম বসুর ১৩১ তম জন্মবার্ষিকীতে গড়বেতায় আসেন শুভেন্দু। মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর এই প্রথম পশ্চিমে মেদিনীপুরে আসেন। সেখানে রামসুন্দর বিদ্যালয়ে বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর মূর্তি উন্মোচন করেন। সেই ‘অরাজনৈতিক’ মঞ্চ থেকে শুভেন্দু বলেন, 'আজকে একটা সংবাদমাধ্যম লিখেছে আমি নাকি কমফর্ট জোনে রাজনীতি করি। এই গড়বেতায় এগারো সালের আগে সবথেকে বেশি তো আমিই আসতাম। এখন ফ্ল্যাটবাড়িতে থাকা কারও কারও অসুবিধা হচ্ছে গ্রামের ছেলেটা রাস্তায় বেরিয়েছে বলে।'তবে সেখানেই শেষ হয়নি শুভেন্দুর ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য। ভাষণ শেষের আগে বলেন, ‘আপনারা একসঙ্গে সবাই চলবেন, স্বামীজির মন্ত্র চরৈবেতি চরৈবেতি বলে। এই পান্তাভাত খাওয়া, মুড়ি খাওয়া ছেলেটা আদর্শের জন্য লড়ছে, আদর্শের জন্য লড়বে।’সেই মন্তব্যের পরই শুরু হয়েছে জল্পনা। ‘ফ্ল্যাটবাড়ি’ মন্তব্যেও ‘রাজনৈতিক’ রেশ থাকলেও ‘আদর্শ’ মন্তব্যে গুঞ্জন বেড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, যদি তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে দেন, তাহলেও কি বিজেপিতে যাবেন না, এমনই বার্তা দিলেন শুভেন্দু? নাকি তৃণমূলে তাঁর ‘আদর্শ’ বজায় থাকছেন বলে বুঝিয়েেছেন? নাকি ‘আদর্শ’ বলতে ‘জনগণের সেবক’ বোঝাতে চেয়েছেন তিনি? তা নিয়ে জল্পনা বেড়েছে। তবে সরাসরি কিছু বলেননি শুভেন্দু।গড়বেতার আসার আগে বৃহস্পতিবার সকালে তমলুক হাসপাতাল মোড় থেকে হ্যামিলটন হাইস্কুল পর্যন্ত পদযাত্রার পর নন্দীগ্রামের বিধায়ক বলেন, ‘আমি বাংলার ছেলে, আমি ভারতের ছেলে।’ দাবি করেন, নন্দীগ্রাম, নেতাইয়ে যেভাবে ‘লড়াই’ করেছেন, সেভাবেই ‘বাংলার জন্য লড়াই’ করবেন। ‘রাজনৈতিক’ মন্তব্য এড়িয়ে যেমন জনগণের উপর জোর দিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবারও সেই একই পথে হাঁটেন শুভেন্দু। বলেন, ‘আমাদের মহান সংবিধান সর্বদা জানিয়েছে, ফর দা পিপল, বাই দা পিপল, অফ দা পিপল।’