রাজ্যের মন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের দলীয় কোন্দল। এই দলীয় কোন্দলের জেরে যে জেলায় তৃণমূলকে বড় দাম দিতে হয়েছে তা সাফ হয়ে যায় ২০২১ সালের নির্বাচনের ফলেই। উত্তরবঙ্গ বাদে বাকি রাজ্যে মোটামুটি তৃণমূলের ঝড় বয়ে যায়। তবে পূর্ব মেদিনীপুরে ঘাসফুল শিবিরের ঝুলিতে আসে মাত্র ৯টি আসন। এই জেলার নন্দীগ্রামে লড়েই হার হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে নির্বাচনের পরও নির্বাচন আসে। সামনেই পুরভোট রাজ্যে। এর আগে দলীয় কোন্দল ঠেকাতে মাঠে নামলেন তমলুকের বিধআয়ক তথা রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। তমলুকে বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে তৃণমূল কর্মীদের সাফ বার্তা দিতে সৌমেনবাবু শুক্রবার বলেন, 'মশারির ভিতর মশারি তৈরি করবেন না। কোনও ব্যক্তিকে পছন্দ না হলে, বিষয়টা আপনার ও আমার মধ্যে রাখুন। ২০১৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি ঘটাবেন না। কারণ সামনেই পুরসভা নির্বাচন। তমলুক পৌরসভা আমার বিধানসভা এলাকার মধ্যেই পড়ে।' মন্ত্রী আরও বলেন, 'কোনও জায়গায় নিজেরা গোপন বৈঠক করে এই বিধানসভায় চিড় ধরানোর চেষ্টা করবেন না। আপনারা আমাকে মান্যতা নাই দিতে পারেন। অন্যান্য নির্বাচনে আমাদের মান্যতা দেবেন কিনা, সেটা পুরোপুরি আপনার বিষয়। কিন্তু কেউ যদি অবমাননা করেন, তাহলে মনে রাখুন, প্রতিটি ক্রিয়ার পালটা প্রতিক্রিয়া আছে। এটা বুঝে রাখুন যে আমি বিজ্ঞানের ছাত্র। আমাকে নিউটনের তৃতীয় সূত্র প্রয়োগ করতে বাধ্য করবেন না।' উল্লেখ্য, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ক্রমেই ভিত নড়েছে তৃণমূলের। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই জেলায় সবকটি আসন পায় তৃণমূল। তবে ২০১৬ সালে তৃণমূলের গড়ে কিছুটা চিড় ধরে। এই নির্বাচনে ৩টি আসন বামেরা জেতে। ২০২১ সালে যেখানে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে তৃণমূলের জয়যাত্রা চলেছে, সেখানে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ৭টি আসনে জেতে বিজেপি। তৃণমূল জেতে ৯টিতে। তমলুক লোকসভা থেকে দুই বার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭টি বিধানসভার মধ্যে তিনটিতে জিতেছে বিজেপি। এই সব পরিসংখ্যানই মাথা. চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে তৃণমূলের।