আজ, ২৫শে বৈশাখ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন। কিন্তু আজকের দিনেও বিবর্ণ থাকছে বিশ্বভারতী। কারণ এখানে বাতিল করা হয়েছে রবীন্দ্রজয়ন্তীর মূল দু’টি অনুষ্ঠান। আজ, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় পাঠভবনের মাধবী বিতানে জন্মোৎসব💯 পালন অনুষ্ঠান করার কথা ছিল। আর সন্ধ্যা ৭টায় গৌরপ্রাঙ্গণে শিক্ষাসত্রের ছাত্র–ছাত্রীদের রবীন্দ্র নৃত্যনাট্য ‘শাপমোচন’ পরিবেশন করার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎই নোটিশ দিয়ে তা বাতিলের কথা জানিয়েছে ‘শান্তিনিকেতন কর্মিপরিষদ’। সুতরাং বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসে কোনও অনুষ্ঠান হচ্ছে না।
এদিকে গত তিনদিন ধরে বন্ধ করে রাখা হয়েছে রবীন্দ্র ভবনের দরজা। ২৫ বৈশাখেও তা খুলছে না। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবার নমনম করে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত? বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সাফাই এখন খুব গরম। যদিও এই সাফাই অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় তাঁদের মত, অমর্ত্য সেনের জমি বিতর্কের জেরেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার থেকে নোবেলজয়ীর বাসভবন ‘প্রতীচꦇী’র পাশে ধরনা জারি রেখেছে বিশ্বভারতী বাঁচাও কমিটি। ২৫ বৈশাখেও সেই ধরনা চলবে। তাই অস্বস্তি ঢাকতে অনুষ্ঠান বাতিলের পথে হাঁটল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের।
অন্যদিকে প্রত্যেক বছর ২৫ বৈশাখ বড় অনুষ্ঠান করে বিশ্🧸বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। গত ৪ মে একটি সূচি প্রকাশ করেছিল ‘শান্তিনিকেতন কর্মিমণ্ডলী’। সেখানে তারা জানিয়েছিল, মঙ্গলবার ভোꦕর ৫টায় গৌরপ্রাঙ্গণে বৈতালিক, সাড়ে ৫টায় উদয়নগৃহে কবিকণ্ঠ, সকাল ৭টায় উপাসনা গৃহে বিশেষ উপাসনা হবে। আর সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে উদয়ন গৃহে রবীন্দ্র স্মৃতিবিজড়িত চেয়ারে শ্রদ্ধার্ঘ্য জ্ঞাপন করবে বিশ্বভারতী পরিবার। এরপর ছিল আরও দু’টি অনুষ্ঠান। সেগুলিও বাতিল করা হয়েছে। এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। পড়ুয়ারা যাতে গরমের কারণে অসুস্থ না হয়ে পড়ে, তার জন্য মূল দু’টি অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।’
ঐতিহ্য ভাঙল বলে মনে হচ্ছে? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ হঠাৎ করে কবিগুরুর জন্মদিনের অনুষ্ঠান বাতিল আগে ঘটেনি। এই ঘটনায় পড়ুয়া অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তবে ধরনা মঞ্চে কবিগুরু স্মরণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবে বিশ্বভারতী বাঁচাও কমিটি। এখানের সদস্য মীনাক্ষী ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা বিশ্বভারতীর ছাত্র–ছাত্রী। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য সম্পর্কে আমরা ওয়াকিবহাল। এখনকার কর্তৃপক্ষের কাছে এর থেকে বেশি কিছু আশা না করা উচিত।’ মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে ধরনা মঞ্চে কবিগুরুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করা হবে। অন্যান্য কলেজের শিক্ষক, অধ্যাপক ও পড়ুয়ারা এসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে দিনভর কবিগুরুকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাবেন। সন্ধ্যায় স্থানীয় শিল্পীরা উপস্থাপন করবেন নৃত্যনাট্য ‘চণ্ডালিকা’।’ আর ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, ‘যাঁর জন্য বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেই রবীন্দ্রনাথকে এভাবে অবমাননা মেনে নিতে পার✨ছি না।’