তাত্ত্বিক আলোচনায় আর আগ্রহ পাওয়া যায় না। মেহনতি মানুষের স্বার্থ, সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব, শ্রেণি সাম্য থেকে গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা। এসব শুনতে শুনতে মানুষও ক্লান্ত, এবার জেলা সম্মেলনে সিপিআইএম নেতাও ক্লান্ত হয়ে পড়লেন। তার জেরে রাজ্য সম্মেলনের আলোচনা চলাকালীন মঞ্চেই ঘুমিয়ে পড়লেন বর্ষীয়ান নেতা। কলকাতায় শুরু হওয়া সিপিআইএমের রাজ্য সম্মেলনের এই ছবিই এখন নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়েছে। কিন্তু তারপরও সব চুপচাপ।নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিপিআইএম নেতা বলেন, ‘এটা স্বাভাবিক ঘটনা। কত বছর আর একই জিনিসের চর্বিতচর্বন হজম করা যায়। বরং এখন উচিত দলের বৃদ্ধতন্ত্র থেকে বেরিয়ে এসে নতুন প্রজন্মের উপর সংগঠনের ভার ছেড়ে দেওয়া। শূন্যের নীচে তো আর কিছু হয় না। এখন তো আমরা শূন্যই। সেখানে নতুন প্রজন্মের নেতা–নেত্রীরা ভুল করুক, ঠিক করুক শূন্যের নীচে তো নামাতে পারবে না। সেটা করলেই তো হয়। তাহলে ঘুমও পাবে না।’ ২০১১ সাল থেকে হেরেই চলেছে সিপিআইএম। সংগঠন কার্যত তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। স্বাধীনতার পর এটাই সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি। সে কথা কলকাতার প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে শুরু হওয়া সিপিআইএমের রাজ্য সম্মেলনের প্রথম দিনই সবাই স্বীকার করেছেন। যোগ দিয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরি, বিমান বসু–সহ পলিটব্যুরোর সাত সদস্য। এখানে মূল আলোচনার বিষয় পার্টি কি করে ঘুরে দাঁড়াবে। তার মধ্যেই দিবানিদ্রার ছবিটা ভাইরাল হয়েছে।ঠিক কী দেখা যাচ্ছে সেই ছবিতে? সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে এক সদস্য পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখছেন। আর পিছনে কেউ ঘুমিয়ে ঢুলছেন। আবার অনেকে ব্যস্ত হোয়াটসঅ্যাপে। এই ছবিতেই দেখা গেল, সিটুর সাধারণ সম্পাদক তথা পলিটব্যুরো সদস্য তপন সেনের ঘুম দিচ্ছেন। তাঁর একহাত দূরেই বসেছিলেন সর্বভারতীয় কৃষক নেতা হান্নান মোল্লা। তাঁর শরীরী ভঙ্গি বুঝিয়ে দিচ্ছে তিনিও ক্লান্ত। আর বিমান বসু মাথা নিচু করে বসে আছেন। সুতরাং এই নিদ্র ভাঙিয়ে দলকে দাঁড় করানো কার্যত কঠিন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।