আবার বড় অপারেশনে সফল হল কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল। এক কিশোরের পায়ের হাড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল দূরারোগ্য ক্যানসার রোগ। এসএসকেএমে চিকিৎসা চলছিল তার। পায়ের রক্তবাহী নালিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। পা টাই নষ্ট হতে বসেছিল। তবে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে অপারেশন করেছেন চিকিৎসকরা। আর তাতেই সাফল্য। সূত্রের খবর, কেবলমাত্র পায়ের ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলি বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পা টি বাঁচিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।বাঁকুড়ার বাসিন্দা ওই কিশোর। সে নবম শ্রেণিতে পড়ে। তার পা আচমকা ফুলতে শুরু করেছিল। প্রচন্ড যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছিল ওই কিশোর। স্থানীয় এলাকায় সে চিকিৎসককে দেখিয়েছিল। কিন্তু সেখানে ঠিক রোগ ধরা যাচ্ছিল না। চিকিৎসাও সঠিকভাবে হচ্ছিল না। এরপরই পিজিতে তাকে নিয়ে আসেন অভিভাবকরা। এরপর চিকিৎসকরা তার পা পরীক্ষা করে দেখেন পায়ের হাড়ে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়েছে।সূত্রের খবর, বাঁ পায়ের গোড়ালির কিছুটা উপর থেকে পা ক্রমশ ফুলে যাচ্ছিল। এরপর ওই পা পরীক্ষা করে দেখা হয় হাসপাতালে। তখন দেখা যায় পায়ের মধ্য়ে টিউমার রয়েছে। পায়ের হাড় পর্যন্ত ছুঁয়ে ফেলেছে এই ক্যানসার। কিন্তু চিকিৎসকরা নিজেদের মধ্য়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন ক্য়ানসারের চিকিৎসা করা হবে। কিন্তু পা টিকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করা হবে।তবে পায়ের যে অংশগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানে নতুন হাড় ও রক্তবাহী নালি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু পা একেবারে কেটে বাদ দেননি চিকিৎসকরা। সরকারি হাসপাতালের বিশিষ্ট চিকিৎসকরা ওই কিশোরের পা যাতে বাদ দেওয়া না হয় সেব্যাপারে সবরকম চেষ্টা করেন। কারণ তার গোটা জীবনটা পড়ে রয়েছে। কিন্তু পরীক্ষায় দেখা যায় তার পায়ের অস্থির পাশাপাশি রক্তবাহী নালিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপরই শুরু হয় জটিল অপারেশন। পায়ে রক্তবাহী নালিও প্রতিস্থাপন করা হয়। পিজির অস্থিরোগ বিভাগের প্রধান চিকিৎসক মুকুল ভট্টাচার্য এই অপারেশনে সবরকমভাবে নেতৃত্ব দেন ।বিশিষ্ট চিকিৎসকদের নিয়ে টিম তৈরি করে শুরু হয় চিকিৎসা। অন্য পা থেকে হাড় কেটে নিয়ে টিবিয়ার বাদ যাওয়া অংশে জোড়া লাগানো হয়। পায়ের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে যাতে রক্তচলাচল স্বাভাবিক হয় তার বন্দোবস্তও করা হয়েছে। অত্যন্ত জটিল অপারেশন। তবে সেই অপারেশনে কার্যত সফল কলকাতার সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক। সব থেকে বড় কথা এই ধরনের রোগে সাধারণ পা কেটে বাদ দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু কিশোরের ভবিষ্যতের কথা ভেবে পা কাটেননি চিকিৎসকরা। তবে তার মধ্য়েই ক্যানসারের চিকিৎসা করেছেন।