রাত বাড়লেই অশরীরীরা আসছে সেখানে। দুলে উঠছে লাইট। শোনা যাচ্ছে কান্নার শব্দ। কিন্তু কাছে গিয়ে মিলছে না কারও দেখা। দর দর করে ঘাম দিচ্ছে পুলিশ কর্তাদের। তাহলে কী থানায় ভূত? অথচ পুলিশের আনাগোনা এখানে সবসময়। কী করে তাহলে আসছে অশরীরীরা? উঠেছে প্রশ্ন। জোড়াবাগান ট্রাফিক গার্ডের সদর দফতরে এই অদ্ভূত সব ঘটনার অভিযোগ। তার কিনারায় নামল ‘ঘোস্ট বাস্টার’।কিন্তু এই ঘোস্ট বাস্টার তো রূপোলি পর্দায় দেখা যায়। বাস্তবেও ঘটছে এসব! এবার বাস্তবে এই ভূতের খোঁজে ডাক পড়েছে কলকাতার ঘোস্ট বাস্টারদের। তাদের দলের নাম ডিটেকটিভস অফ সুপার ন্যাচারাল। পুলিশ ভূতের ভয়ে সিঁটিয়ে আছে শুনে তারাও অবাক। রাতের অন্ধকারে ফাইলের পাতা নাকি নিজে থেকেই ওলটপালট হচ্ছে। কিন্তু কাছে গিয়ে দেখা যাচ্ছে কেউ নেই। অথচ শোনা যাচ্ছে কান্নার আওয়াজ!শতাব্দীপ্রাচীন সুবিশাল বাড়িতে রয়েছে জোড়াবাগান থানা। শোভাবাজার স্ট্রিটে রায় বাড়ি হিসেবেই পরিচিত। অধুনা কলকাতা পুলিশের জোড়াবাগান ট্রাফিক গার্ডের সদর দফতর। এখানে দিনরাত পুলিশের আনাগোনা লেগেই থাকে। কিন্তু রাত বাড়লেই নানা কাণ্ডকারখানা ঘটতে থাকে। বাধ্য হয়ে কিনারা করতে জোড়াবাগান ট্রাফিক গার্ডের অফিসাররা যোগাযোগ করেন একদল যুবক–যুবতীর সঙ্গে। যাদের দলের নাম—ঘোস্ট বাস্টার।এই দলের সদস্য ঈশিতা দাস সান্যাল বলেন, ‘কলকাতা পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ভূতের হাত থেকে রেহাই পেতে আমাদের সাহায্য চায়। কেউ রাতের অন্ধকারের ছোট বাচ্চা দেখতে পাচ্ছে, কেউ ভাবছে তার ঘাড়ের উপর কেউ চেপে বসেছে। এমনকী নানা শব্দ শুনতে পাচ্ছে।’ অশরীরীদের খুঁজে বের করতে বিভিন্ন যন্ত্রের সাহায্য নেন ঘোষ্ট বাস্টারের সদস্যরা। তার মধ্যে রয়েছে ইলেকট্রো–ম্যাগনেটিক ফিল্ড ডিটেক্টর, সাউন্ড রেকর্ডার, এক্সটার্নাল থার্মোমিটার, প্যারাবোলিক থার্মোমিটার, লেজার গ্রিড, মোশন সেনসরের মতো যন্ত্র।এত ঢাকঢোল পিটিয়ে ভূত ধরতে নেমে শেষমেশ কিছুই মিলল না। জোড়াবাগান ট্রাফিক গার্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাতে যে সমস্ত পুলিশকর্মীরা ট্রাফিক গার্ডের ব্যারাকে থাকেন এবং ডিউটি করেন, তাদের বিশেষ কিছু অভিযোগ ছিল। সব মিলিয়ে এখন স্বস্তি জোড়াবাগান ট্রাফিক গার্ডে। নিশ্চিন্তেই ডিউটি করছেন কর্মীরা।