⛄ কোভিড চলাকালীন 'তরুণের স্বপ্ন' নামে একটি প্রকল্প চালু করেছিল রাজ্য সরকার। যে প্রকল্পে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তর ছাত্রছাত্রীদের ট্যাব বা মোবাইল কেনার জন্য টাকা দেওয়া হয়। করোনাকালে অনলাইনে পড়াশুনোর সুবিধার্থে এই প্রকল্প চালু করা হয়। কিন্তু কোভিড কেটে গেলেও এখনও সেই প্রকল্প চালু রয়েছে। পড়ুয়ারা টাকাও পাচ্ছেন। এবার সরকারের পক্ষ থেকে স্কুল নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, 'তরুণ স্বপ্ন' প্রকল্পে টাকা পাওয়ার পরও কোন ছাত্রছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক বসেছে না তা নির্দিষ্ট করে জানাতে।
🌱জানা গিয়েছে, এই নির্দেশের সঙ্গে একটি ফর্ম পাঠানো হয়েছে স্কুলগুলিকে। সেই ফর্মে লিখে শিক্ষা দফতরকে জানাতে হবে টাকা পাওয়ার পরও কোন কোন পড়ুয়া মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেনি।
ꦜকরোনাকালে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সচল রাখতে ২০২০ সালে অক্টোবর মাসে রাজ্য মন্ত্রিসভা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের এই ট্যাব বা মোবাইল কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। যাতে ছাত্রছাত্রীরা তাদের পড়াশুনো জারি রাখতে পারে। গরীব ও প্রান্তিক পড়ুয়াদের উৎসাহ দিতে এই প্রকল্প চালু করা হয়। কিন্তু শেষ কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে পড়ুয়ারা টাকা নিলেও মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছেন না। তাদের স্কুল ছুট হিসাবেই গণ্য করছে শিক্ষা দফতর। তাদেরই তালিকা তৈরি করতে চাইছে শিক্ষা দফতর।
𓆉শাসকদলের অনুমোদিত শিক্ষক সংগঠন এই উদ্যোগকে সদর্থক দৃষ্টিতেই দেখছে । পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সভাপতি বিজন সরকার সংবাদমাধ্যমকে বলেন,'তরুণের স্বপ্ন প্রকল্প একটি বিশেষ সময়ের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছিল, কিন্তু আচমকা তা বন্ধ করে দেওয়া একেবারেই যুক্তিযুক্ত নয়। কোভিডের পরবর্তী সময়ে দেশ বা সারা বিশ্বের পড়াশোনা অনেক বেশি প্রযুক্তি নির্ভর হয়েছে। কোনও গরিব এবং প্রান্তিক পরিবারের ছেলেমেয়ে, যাদের মোবাইল বা ট্যাব কেনার পয়সা নেই, তারা সরকারি অর্থে মোবাইল বা ট্যাব কিনে বড় পরীক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারবে। প্রযুক্তিই তাকে সেই জায়গা করে দেবে। বিষয়টিকে এ ভাবে দেখলেই ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রকল্পটি যুক্তিযুক্ত মনে হবে।'
ꦆতবে বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন মনে করছে কোভিডের সময় চালু এই প্রকল্প এবার তুলেও দেওয়া উচিত। বঙ্গীয় শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডল মনে করেন, 'করোনা সংক্রমণের সময় স্কুলে স্কুলে পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছিল। সেই সময় ছাত্রছাত্রীদের জন্য মোবাইল অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। তাই সেই সময় ট্যাব বা মোবাইল কেনার টাকা দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। কারণ, অনলাইনে পড়াশোনা করতে গেলে ট্যাব বা মোবাইল আবশ্যিক হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। আবার সব কিছুই অফলাইনে করা যাচ্ছে , তাই এ ভাবে স্কুলের কাছে হিসেব না চেয়ে বরং ছাত্রছাত্রীদের অর্থ দেওয়া বন্ধ হোক।'
ܫতবে এই প্রকল্প বদ্ধ করে দেওয়া ব্যাপারে শিক্ষা দফতর কোনও ইঙ্গিত এখনও দেয়নি। এক আধিকারিকের কথায়, তালিকা তৈরি করে পরিস্থিতিটা বুঝে নিতে চাইছে দফতর। তারপরেই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।