চূড়ান্ত ফলাফল আসার আগে এমন কোনও সংস্থার প্রতিষেধক কেন বেছে নেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী–মুখ্যমন্ত্রীদের ভার্চুয়াল বৈঠকে সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী এই প্রশ্নও তুললেন, কেন এভাবে কেবল মাত্র দু’টি প্রতিষেধককেই বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র?এমনকী তিন কোটি কোভিড–যোদ্ধাকে না হয় বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হল, বাকিদের কী হবে? কোভিড–যোদ্ধা ছাড়া বাকিদের টিকাকরণের খরচ রাজ্যকে দিতে হবে কি? প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে অবশ্য এই প্রশ্নের জবাব মেলেনি। বরং পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য দ্বিতীয় দফায় বৈঠক করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। দেশজুড়ে গণটিকাকরণ শুরু করতে চলেছে সরকার। তাই দু’টি প্রতিষেধককে বেছে নিয়েছে কেন্দ্র। একটি অক্সফোর্ড এবং অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার তৈরি কোভিশিল্ড, প্রযুক্তি হস্তান্তরের মাধ্যমে ভারতে যা তৈরি করছে পুণের সেরাম ইনস্টিটিউট। অন্যটি হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন। মানবদেহে এখন তৃতীয় দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চালু রয়েছে কোভ্যাক্সিনের। বিদেশে শেষ হলেও এই দেশে এখনও তৃতীয় দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চালু রয়েছে কোভিশিল্ডেরও। তা সত্ত্বেও জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের প্রশ্নে ওই দুই প্রতিষেধককে ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। আর তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।ভার্চুয়াল বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কোন দুটো টিকা দেশবাসীকে দেওয়া হবে, তা কেন্দ্রই ঠিক করে দিয়েছে। রাজ্যকে সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া হয়নি। ভ্যাকসিনকে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেওয়ার আগে বিজ্ঞানসম্মত মতামত নেওয়া দরকার। দুটি ভ্যাকসিনের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি? তাহলে কেন্দ্র আগেভাগেই তা জানিয়ে দিক। টিকা দু’টি– কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা নিয়ে যথাযথ বৈজ্ঞানিক নথিপ্রমাণ আছে তো?’ এই প্রশ্নগুলি তুলেছেন তিনি।প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মমতার সংশয় দূর করার চেষ্টা করেন নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পাল। তিনি তৃণমূল নেত্রীকে আশ্বাস দিয়ে জানান, বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ভিত্তিতে এই কথা বলা যায় যে দু’টি প্রতিষেধক সম্পূর্ণ নিরাপদ। গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে কোভিড টিকাকরণ। তার আগে প্রস্তুতি ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা সারতে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে তিনি জানান, ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতেই পারে। সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও করা হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আরও চারটি প্রতিষেধক ছাড়পত্র পাওয়ার তালিকায় রয়েছে। টিকাকরণের দ্বিতীয় পর্বে ওই প্রতিষেধকগুলি ব্যবহারের জন্য পাওয়া যাবে।’ সূত্রের খবর, বৈঠকে দুজন মুখ্যমন্ত্রীকে বক্তব্য পেশের সুযোগ দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্যজন পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী। বৈঠকে চিকিৎসক, নার্স, পুলিশ, সাফাই কর্মীদের পাশাপাশি পরিবহণ কর্মীদেরও কোভিডযোদ্ধার তালিকায় আনার আবেদন জানান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।