দক্ষিণ কলকাতার বাঁশদ্রোণী থানায় হাজিরা দিয়ে দাদাকে নিজেই খুন করার কথা জানিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিলেন ভাই। সেই ঘটনায় পরে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে আটক করেছিল। কিন্তু, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ যে তথ্য জানতে পেরেছে তাকে চমকে উঠেছেন পুলিশ আধিকারিকরাও। ময়নতদন্তের রিপোর্টে জানা গি𝓰য়েছে, অভিযুক্ত শুভাশিস দাস তার দাদা দেবাশিস দাসকে খুনই করেননি, বরঞ্চ তার মৃত্যু হয়েছিল সেরিব্রাল স্ট্রোকের কারণে! শুধুমাত্র দুবেলা দুমুঠো খেতে পাওয়ার কারণে দাদাকে খুন করার গল্প ফেঁদেছিল শুভাশিস।
গতকাল ভোরে বাঁশদ্রোণী থানায় হাজিরা দিয়ে শুভাশিস পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তিনি তার দাদাকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করেছেন। পুলিশ জানতে পেরেছে, সেভাবে কোনও কাজ করতেন না শুভাশিস। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন দাদা দেবাশিস। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে আর বেশিদিন বাঁচবেন না তিনি। ফলে তার মৃত্যুর পর ভাইকে যাতে না খেতে পেয়ে মরতে হয় সেই আতঙ্কে ভাইকে থানায় গিয়ে খুনের কথা বলে আত🌺্মসমর্পণ করতে বলেছিলেন খোদ দাদাই। পুলিশ জানতে পেরেছে, মৃত্যুর আগে দেবাশিস ভাইকে জানিয়েছিলেন, খুনের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হলে সারা জীবন সরকারি খরচে খাওয়া এবং থাকার ব্যবস্থা হয়ে যাবে। জানা গিয়েছে, দেবাশিস এবং শুভাশিসের মা যাদবপুরের সিরামিকস ইনস্টিটিউটে কাজ করতেন। সেখানে অবসর গ্রহণের পর তিনি ৩৫ হাজার টাকা পেনশন পেতেন। শুভাশিসের দাদাও🅠 একই সংস্থায় কাজ করতেন। কিন্তু, দৃষ্টিশক্তি হারানোর পর তিনি বাড়িতেই ছিলেন। ১৫ হাজার টাকা করে পেনশন পেতেন মাসে। শুভাশিস নিজেও একটি সংস্থায় কাজ করতেন। কিন্তু, ২০১৭ সালের পর থেকে তিনি বেকার রয়েছেন।
🍸প🍎্রথমে তারা বাঁশদ্রোণীর সোনালী পার্কের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন। কিন্তু, তার মায়ের মৃত্যুর পর সেই ফ্লাট ছেড়ে দিয়ে নিরঞ্জন পল্লীর ওই বাড়ি ভাড়া নেন। তারা দুই ভাই কেউই সেভাবে রান্না করতে পারতেন না। ফলে মাঝেমধ্যেই শুকনো খাবার খেয়ে অনেকদিন চালিয়ে দিয়েছেন।
গতকাল ভোরে মৃতদেহ উদ্ধারের সময় দেবাশিসের মুখের উপর থেকে বালিশ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু, শরীরে কোনও ক্ষতচিহ্ন না থাকায় প্রথমে পুলিশের সন্দেহ হয🐠়েছিল। পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরে স্পষ্ট হয়ে যায় যে সেরিব্রাল অ্যাটাকেই মৃত্যু হয়েছিল দেবাশিসের। এরপরে শুভাশিসকে জেরা করার পর পুরো বিষয়টি তিনি পুলিশকে খুলে বলেন। তার মানসিক অবস্থা বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।