আরজি কর কাণ্ডে প্রথমবার প্রকাশ্যে মুখ খুলে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। সোমবার শিয়ালদা আদালতে তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের পর জেলে ফেরার সময় প্রিজন ভ্যানে উঠে সঞ্জয় দাবি করেন, ‘তাঁকে ভয় দেখানো হচ্ছে। ডিপার্টমেন্ট তাঁকে চুপ থাকতে বলেছে।’ আর সঞ্জয়ের এই দাবির প্রেক্ষিতে আরজি কর মামলা রাজ্যের বাইরে স্থানান্তরের দাবি তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানির আগে নিজের দাবির সমর্থনে একাধিক যুক্তি পেশ করলেন বিরোধী দলনেতা।সোমবার আদালতে পেশ করা হয়েছিল আরজি কর কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। আদালত থেকে জেলে ফেরার সময় প্রিজন ভ্যান থেকে চিৎকার করে তিনি বলেন, ‘আমার কথা শোনেনি। আমি এতদিন চুপচাপ ছিলাম। আমার কোনও কথা শোনেনি। আমাকে বিনা কারণে ফাঁসানো হয়েছে। আমার নামে সব কিছু দেওয়া হচ্ছে। আমি কিন্তু রেপ অ্যান্ড মার্ডার করিনি। আমাকে সব জায়গায় ভয় দেখাচ্ছে। তুমি কিছু বলবে না। ডিপার্টমেন্ট আমাকে ভয় দেখিয়ে এই করেছে। আমি কিন্তু পুরোপুরি নির্দোষ।’সঞ্জয়ের এই দাবির প্রেক্ষিতে আরজি কর মামলা রাজ্যের বাইরে স্থানান্তরের দাবি জানান শুভেন্দুবাবু। তিনি বলেন, ‘যারা অভয়ার বিচারের দাবিতে লড়ছেন সেই আইনজীবীদের কাছে আমার পরামর্শ মামলাটা পশ্চিমবঙ্গের বাইরে নিয়ে যান। তাহলে সত্য উদ্ঘাটিত হবে। অভয়ার পরিবার শান্তি পাবে। অভয়ার আত্মা শান্তি পাবে। পশ্চিমবঙ্গের জনগণ, গোটা দেশের জনগণ যারা উই ওয়ান্ট জাস্টিসের পক্ষে লড়ে যাচ্ছেন তারা প্রত্যেকেই খুশি হবেন। আমি অনুরোধ করব সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি বিবেচনা করে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে নিয়ে যান। কারণ এই পশ্চিমবঙ্গে ব্যাঙ্ক ফ্রডের আসামি ইডি যাকে ধরেছিল, তিনি ১৫ মাসই SSKMএ উডবার্ন ওয়ার্ডে কাটিয়েছেন। সমস্ত আরাম করেছেন, কালীঘাটের কাকুর ছবি আপনারা দেখিয়েছেন তিনি ঘরের পোশাক পরে চা খাচ্ছেন, আরাম করছেন, টিভি দেখছেন। তৃণমূলের বড় বড় নেতাদের আপনারা দেখেছেন। আপনারা দেখেছেন অনুব্রত মণ্ডলের মেডিক্যাল রিপোর্টকে কী ভাবে ম্যানুফ্যাকচার করা হয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়সহ সমস্ত বরিষ্ট চোরেরা যারা এখনও জেলে আছে তারা যেদিন যা খেতে চায় সেই খাবার জেল কর্তৃপক্ষ পৌঁছে দেয়। এখানে জেলার, সুপার, ডাক্তার, সরকার, পুলিশ সব মিলে মিশে একাকার। স্বাভাবিকভাবে এখানে বিচার হতে পারে না।’শুভেন্দুবাবুর কথায়, ‘যে প্রশ্নচিহ্ন আজকে অভিযুক্ত তুলে দিল এর সমাধান তখনই হতে পারে যদি রাজ্যের বাইরে নিয়ে গিয়ে সঠিক ভাবে তদন্ত হয়। আজকের ঘটনার পরে আবার হেফাজতে নিয়ে জেরা করে তার কাছ থেকে সঠিক পদ্ধতিতে সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট জমা করিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণে সিবিআইকে নির্দেশ দিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।’বলে রাখি, রবিবার ভাইফোঁটার সন্ধ্যায় আরজি করের নির্যাতিতার বাড়ি গিয়ে তাঁর বাবা মায়ের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন শুভেন্দু অধিকারী। তার পরই এই মামলা রাজ্যের বাইরে নিয়ে যেতে আবেদন জানালেন তিনি।