মৃতের স্ত্রীর অনড় সিদ্ধান্তে পূর্বাঞ্চলে প্রথম হাত প্রতিস্থাপনের সাক্ষী থাকল কলকাতা। পরিবারের সদস্যরা রাজি ছিলেন না এই অঙ্গ দানে। কিন্তু তারপরও কখনও রাজি আবার𓆏 কখনও নিমরাজি হয়েছিলেন। এমন এক পরিস্থিতিতে পরিবারের সদস্যদের ব্যাকফুটে ফেলে নিজের বুকে কার্যত পাথর রেখে স্বামীর অঙ্গ দান করতে এগিয়ে গেলেন স্ত্রী। আর তাতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা অবাক হলেও নবজীবন পেলেন এক যুবক। যা নিয়ে এখন দিনভর চর্চা শুরু হয়েছে। চিকিৎসা জগতে এটা একটা বড় সাফল্য ঠিকই। তবে আরও বড় বিষয় হল, ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতায়। এর আগে অন্যান্য অঙ্গ প্রতিস্থাপনের নজির কলকাতার নানা সরকারি হাস🅺পাতালে আছে। কিন্তু ব্রেন ডেথ রোগীর হাত অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপন এটা বিরলতম। ফলে চিকিৎসা জগতের পাশাপাশি রাজ্যের মানুষের কাছে বড় খবর এখন এটাই।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা এক যুবকের দু’টি হাত নিয়ে প্রতিস্থাপন করা হল এসএসকেএম হাসপাতালে। ওই দুটি হাত আর এক যুবকের শরীরে জুড়ে দেওয়া হয়। ‘ব্রেন ডেথ’ হওয়া এক রোগীর হাত আর একজনের শরীরে প্রতিস্থাপন করার ঘটনা আগে এই শহরে ঘটেনি বলেই খবর। তবে বিশ্বে এই ঘটনার সংখ্যা ১১০টির মতো। দেশের সংখ্যাটা ১৫। এই তালিকায় এবার ঢুকে পড়ল কলকাতার সরকারি হাসপাতাল। সকাল ৬টা থেকে রাত পর্যন্ত সময় লেগেছে এই প্রতিস্থাপন করতে। তবে এই প্রতিস্থানের পর কয়েকটি দিন কড়া পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে রোগীকে। কারণ এটি অন্যান্য অঙ্গ প্রতᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚ𒀱ᩚᩚᩚিস্থাপনের মতো নয়।
কেন এই প্রতিস্থাপন করতে হল? গত ৯ জুলাই গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে পড়ে যান উলুবেড়িয়ার রাজপুর করাতবেরিয়ার বাসিন্দা হরিপদ রানা। তাঁকে এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল উলুবেড়িয়া থেকে। ১৩ জুলাই হরিপদ রানার ‘ব্রেন ডেথ’ হয়। তখন তাঁর পরিবারের সদস্যদের মরণোত্তর অঙ্গদান সম্পর্কে বোঝান চিকিৎসকরা। হরিপদর রক্তের গ্রুপের সঙ্গে মিল পাওয়া যায় আর এক যুবকের। যিনি এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তখনই হাত দানের𓄧 গুরুত্বও বোঝানো হয় পরিবারের সদস্যদেরকে। হরিপদ রানার ভাইপো দেবকুমার বলেন, ‘আমরা বিষয়টিতে রাজি হলাম। কারণ কাকার দেহের ময়নাতদন্ত হবে। তাই অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও হাত যদি অন্য রোগীদের জীবন দান করতে পারে সেটা তো ভালই। কাকিমাও রাজি ছিলেন।’
আরও পড়ুন: বিজেপির কে🌳ন্দ্রীয় নেতারা হাজির বাংলায়, কেন নির্বাচনে ভরাডুব🌌ি? আজ জরুরি বৈঠক
তারপর ঠিক কী ঘটল? বিরাটির এক যুবক প্রায় এক বছর আগে বিদ্যুতের শকের ঝলসে যান। তার জেরে ওই যুবকের ডান–হাত বাদ দিতে হয়। তবে প্রতিস্থাপন♐ের কথা মাথায় রেখে শিরা, ধমনী, স্নায়ু ও টেন্ডন ঠিক রেখে কোমর থেকে মাংস নিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। তারপর এমন সুযোগ আসায় ওই ব্যক্তির হাত যুবকের শরীরে প্রতিস্থাপনের জন্য প্রস্তুত করা হয়। মেডিক্যাল বোর্ডের ছাড়পত্রও নেওয়া হয়। ‘রিজিওনাল অর্গান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশনে নাম নথিভুক্ত করা হয়। আর শুক্রবারই বিরাটির ওই যুবককে এসএসকেএম হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। তারপর সমস্ত প্রক্রিয়া ও অনুমতি মেলার পর ভোর ৫টা থেকে কাজ শুরু হয়। হরিপদর দু’টি হাতই কনুইয়ের কিছুটা উপর থেকে কেটে নেওয়া হয়। আর তা আর এক যুবকের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। এই কাজে প্রথমে মৃতের পরিবার রাজি হলেও পরে পিছিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু মৃতের স্ত্রী অনড় সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অবশেষে নবজীবন পেলেন ওই যুবক।