লকডাউনের জেরে কাজ হারিয়ে ফেলেছিল সে। মানসিক অবসাদে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করতে গিয়েছিল অসমের নাবালক। নিরাপত্তারক্ষীদের তৎপরতায় অল্পের জোরে প্রাণ বাঁচল তার। কর্মসূত্রে হায়রাবাদে ছিল ওই নাবালক। কিন্তু লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়ে। অবসাদ ঘিরে ধরে তাকে। আয় কি করে করবে, তা নিয়ে কোনও কুলকিনারা খুঁজে না পেয়ে অসমের পথও ধরেছিল। কিন্তু বাড়িতে গিয়ে পরিবারকে কি বলবে? তাই মাঝপথেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। এদিন সাঁতরাগাছি স্টেশনে নেমে সোজা দ্বিতীয় হুগলি সেতুর উপর চলে এসেছিল। ঝাঁপ দেওয়ার আগের মুহূর্তে তাকে ধরে ফেলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, জেরায় অনটনের কারণেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বলে জানিয়েছে ওই কিশোর। আপাতত তাকে একটি হোমে রাখা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর সতেরোর ওই নাবালক অসমের বাসিন্দা। পুলিশকে সে জানিয়েছে, অভাব অনটনের মধ্যে দিন কাটছিল তার পরিবারের। সেজন্য সংসারের হাল ধরতে অল্প বয়সেই কাজের জন্য হায়দরাবাদে পাড়ি দিয়েছিল সে। সেখানে জোগাড়ের কাজও করছিল সে। কিন্তু বিধি বাম। করোনার জন্য জারি হওয়া লকডাউনে সমস্ত হিসেব উলটপালট হয়ে যায়। সেখানে কাজও হারিয়ে ফেলে সে। তার পর থেকে চরম আর্থিক কষ্টে ভুগছিল ওই নাবালক। খরচ জোগাতে না পেরে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেয় সে। হায়দরাবাদ থেকে বাড়ি ফেরার ট্রেনে চেপে বসে ওই কিশোর। কিন্তু বাড়ি ফিরে বাবা মাকে কি বলবে, আদৌ কাজ পাবে কি না এই সব চিন্তা করে অবসাদে ভুগতে শুরু করে। শেষে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে সে। এদিন সাঁতরাগাছি স্টেশনে নেমে সোজা চলে আসে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর ওপর। ওই কিশোরকে উদ্দেশ্যহীনভাবে সেতুর ওপর ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হয় কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীদের। ওই কিশোরের কাছাকাছি যেতে তারা বুঝতে পারেন, যে কোনও সময় নদীতে ঝাঁপ দিতে পারে ওই নাবালক। তবে লাফানোর আগের মুহূর্তেই ওই কিশোরের পিছন দিক থেকে গিয়ে কোনওরকম জাপটে ধরে উদ্ধার করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার বিষয় জানতে পারেন তারা। এর পরেই পুলিশের হাতে ওই নাবালককে তুলে দেওয়া হয়।