বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে আলু–সহ অন্যান্য সবজির দাম আকাশ–ছোঁয়া। এর আগেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার থেকে সাবধান করা হয়েছিল পাইকারি ও খুচরো ব্যবসায়ীদের। আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় দেওয়া হয়েছিল ৭ দিন। অন্যথায় রপ্তানি বন্ধের হুমকিও দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতির বদল হয়নি। তাই এবার পথে নামতে বাধ্য হল কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ।জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে কলকাতা শহরের বড় বড় পাইকারি ও খুচরো বাজারে সারপ্রাইজ ভিজিট করবেন এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের আধিকারিকরা। আলু, শাক–সবজির দাম নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা তা তাঁরা খতিয়ে দেখবেন। প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থাও নিতে পারেন তাঁরা। কর্তৃপক্ষের সন্দেহ, আলু, সবজি গোপনে মজুত করে রাখার জেরেই এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি।এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের এক কর্তা জানান, আমরা তদন্তকারী আধিকারিকদের চারটি দলে ভাগ করে শহরের চারদিকে বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরো বাজারে পাঠাব। প্রত্যেকটি দলে ৪ জন আধিকারিক থাকবেন। তাঁরা সে সব বাজারে সারপ্রাইজ ভিজিট করবেন। সেখানে কেমন দামে শাক–সবজি বিকোচ্ছে তা পরিদর্শন করবেন তাঁরা। বিশেষ নজর দেওয়া হবে আলুর দামের ওপর। এই প্রক্রিয়া বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে। পরবর্তী দু–তিন দিন এই অভিযান চলবে।সরকারি টাস্কফোর্সের সদস্য ও ওয়েস্ট বেঙ্গল ফোরাম অফ ট্রেডার্স অর্গানাইজেশনের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, ‘বেশিরভাগ সবজির দামই মারাত্মকভাবে বেড়েছে। আলুর দাম তো দ্বিগুণ। গত বছর এই সময় ১৪–১৫ টাকা কিলো দরে আলু বিকিয়েছে। আর এখন কিলো প্রতি ২৭–২৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে আলু। কয়েকদিন আগে তো আলুর দাম ৩০ টাকাও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। একদিকে আমফান ঝড় আর মরশুমি বৃষ্টি অত্যাধিক হওয়ায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে, আরেকদিকে হিমঘরে বেআইনিভাবে আলু মজুত করে রাখায় এভাবে দাম বেড়েছে।’পূর্ব কলকাতার এক বাজারের সবজি বিক্রেতা নিতাই দাস বলেন, ‘পুলিশ এসে আমাদের সবজির দাম কম নিতে বলে গিয়েছে। কিন্তু যদি বেশি দামেই সবজি কিনতে হয় তা হলে কমে বিক্রি করব কীভাবে? সরকারের উচিত মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলু, সবজির দাম যাচাই করে নেওয়া, যারা এই জিনিসগুলি শহরে ও পাইকারি বাজারে নিয়ে আসে।’