সবার অলক্ষ্যে দিদির বাড়ি ছেড়ে উধাও হওয়াই কাল হল দুই ভাইয়ের। নাটক করেও পার পেল না দুই অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেহালার জোড়া খুনের ঘটনা জানাজানি হতেই সবার সঙ্গে দিদির বাড়িতে পৌঁছায় অভিযুক্ত দুই মাসতুতো ভাই। তাদের দু’জনকে শোকে বিহ্বল হতে দেখেছিলেন আত্মীয়রা। ডুকরে কেঁদেও উঠেছিল দু’জনে। পুলিশের সন্দেহ থেকে বাঁচতে সবরকম চেষ্টা করেছিল মৃত সুস্মিতা মণ্ডলের দুই মাসতুতো ভাই। তবে শেষরক্ষা হয়নি। ঘটনার দিন সবার অলক্ষ্যে দিদির বাড়ি ছেড়ে উধাও হওয়াই কাল হল পর্ণশ্রী জোড়া খুনে অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের। তাদের দু’জনের এই আচরণে খটকা লেগেছিল আত্মীয়দের। অবশ্য সেই সময় এই সামান্য বিষয় নিয়ে কেউ মাথা ঘামাতে চাননি। তবে আত্মীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় এই সূক্ষ্ম তথ্যই মা-ছেলের জোড়া খুনের তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে বলে সূত্রের খবর। সেখান থেকেই ‘ব্রেক থ্রু’ হাতে আসে গোয়েন্দাদের। সন্দেহের তির গিয়ে পড়ে সঞ্জয় ও সন্দীপের উপর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, খোঁজ নিতে গিয়ে লালবাজারের গোয়েন্দারা সঞ্জয়ের ঋণে জর্জরিত হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। শনিবার রাতে জেরা করার জন্য সঞ্জয়কে মহেশতলার বাড়ি থেকে লালবাজারে নিয়ে আসেন তদন্তকারীরা। শনিবার রাত থেকে শুরু হয়ে রবিবার দুপুর পর্যন্ত টানা জেরায় দোষ স্বীকার করে নেয় সঞ্জয়। তার ভাই সন্দীপও এই খুনে যুক্ত রয়েছে বলে গোয়েন্দাদের জানায় সে। দু'জনকেই গ্রেফতার করা হয়।পুলিশি জেরায় সঞ্জয় জানিয়েছে, যে মহিলাকে সে বিয়ে করেছিল, তাঁর আগের পক্ষের ছেলে রয়েছেন। সেই ছেলের বিয়েতে অনেক টাকা খরচ করতে হয়েছিল সঞ্জয়কে। তখন থেকেই ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়ে সঞ্জয়। ধার শোধ করতে আত্মীয়দের কাছে টাকা চাইলেও কেউ টাকা দেননি। সবাই তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, দুই ভাইকে দেখেই দরজা খুলে দিয়েছিলেন সুস্মিতা। তাঁর ছেলে সেই সময় অনলাইন ক্লাস করছিল। ছেলের পড়ায় যাতে অসুবিধা না হয়, সেজন্য বাইরে থেকে তার ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন সুস্মিতা। সেই সুযোগে সুস্মিতার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে নৃশংসভাবে খুন করে দুই ভাই। মাকে খুন করতে দেখে ফেলায়, দুই মামার হাতে তাকে ও প্রাণ হারাতে হয়।