লকডাউন পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন করে গতি পেয়েছে। করোনাভাইরাস পরবর্তী সময়েও ভার্চুয়াল পড়াশোনার সেই ধারা বজায় রাখার ক্ষেত্রে একাধিক পদক্ষেপ করল কেন্দ্র।‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের পঞ্চম তথা শেষ দফার ঘোষণার সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানান, করোনা মহামারীর সময়ের যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তার ভিত্তিতে অনলাইন শিক্ষার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। সেজন্য ‘প্রধানমন্ত্রীর ই-বিদ্যা’ চালু করা হচ্ছে। সীতারামন বলেন, 'ডিজিটাল বা অনলাইন শিক্ষার মাল্টি-মোড অ্যাক্সেসের জন্য অবিলম্বে পিএম ই-বিদ্যা প্রোগাম চালু করা হবে।' অর্থাৎ অনলাইন শিক্ষার জন্য বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করা হবে।অর্থমন্ত্রী জানান, সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের স্কুল শিক্ষাক্ষেত্রেও প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। প্রতিটি শ্রেণির পড়ুয়াদের পাঠ্যবইয়ের জন্য 'দীক্ষা' নামক একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করা হবে। সেখানে পাঠ্যবইয়ের ই-কনটেন্ট মিলবে এবং কিউআর কোড দিয়ে ব্যবহার করা যাবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, 'এটা এক দেশ, এক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম হবে।' প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পর্যন্ত পড়ুয়াদের জন্য শ্রেণিপিছু একটি নির্দিষ্ট টিভি চ্যানেলও থাকবে। যা 'এক দেশ, এক চ্যানেল' হিসেবে কাজ শুরু করবে। একইসঙ্গে শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে রেডিয়ো, কমিউনিটি রেডিয়ো এবং পডকাস্টের মতো বিষয়গুলিও ব্যবহার করা হবে। দৃষ্টিহীন ও শ্রবণশক্তিহীন পড়ুয়াদের জন্য বিশেষ ই-কনটেন্ট থাকবে বলে জানান সীতারামন।তবে শুধু স্কুল নয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকেও অনলাইনে কোর্স শুরু করার অনুমতি দিতে চলেছে কেন্দ্র। সীতারামন বলেন, 'দেশের ১০০ টি বিশ্ববিদ্যালয়কে আগামী ৩০ মে'র মধ্যে অনলাইনে কোর্স শুরু করার অনুমতি দেওয়া হবে।'পাশাপাশি লকডাউন পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের উপর যে মানসিক প্রভাব পড়ছে, সেই বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'পড়ুয়া, শিক্ষক এবং পরিবারের মানসিক স্বাস্থ্য এবং মানসিক সুস্থতার জন্য একটি মানসিক সহায়তা প্রদানকারী কর্মসূচি অবিলম্বে চালু করা হবে।'এদিকে স্কুল, শিশু এবং শিক্ষকদের জন্য নয়া একটি জাতীয় পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষাগত কাঠামো চালু করতে চলেছে কেন্দ্র। একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বের মাপকাঠিতে যে দক্ষতা প্রয়োজন, সেই বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হবে। একইসঙ্গে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় বুনিয়াদি সাক্ষরতা এবং সংখ্যাতত্ত্ব মিশন চালু করা হবে। সেই মিশনের আওতায় ২০২৫ সালের মধ্যে পঞ্চম শ্রেণীর প্রত্যেক পড়ুয়া শিক্ষার একটি স্তর অর্জন ও তার ফলাফল নিশ্চিত করা হবে।