শিল্পপতি রতন টাটা তুলে ধরলেন তার অতীত জীবনের গল্প। হালে মহারাষ্ট্র সরকার রতন টাটাকে প্রথম ‘উদ্যোগ রত্ন’ পুরস্কারে ভূষিত করে। টাটা গ্রুপের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এই প্রসঙ্গেই তার শুরুর দিনের স্মৃতিচারণ করেন আরও একবার। এক কুখ্যাত গ্যাংস্টারের সঙ্গে টক্কর দেওয়ার কথাও উঠে আসে। প্রায় এক দশক পুরনো ভিডিয়োটিতে দেখা যায় ভারতীয় শিল্পপতি বর্ণনা করছেন এক গ্যাংস্টারের সঙ্গে মোকাবিলার কথা। ভিডিয়োটি কলম্বিয়া বিজনেস স্কুল তাদের ইউটিউব চ্যানেলের শেয়ার করেছিল। ৮৫ বছরের অভিজ্ঞ শিল্পপতি ঘটনাটির কথা স্মরণ করে বলেন, 'আমি চেয়ারম্যান হওয়ার ১৫ দিন পর আমাদের টেলকোতে (বর্তমানে টাটা মোটরস) একটি বড় মাপের সমস্যা দেখা দেয়। একজন গ্যাংস্টার আমাদের ইউনিয়নের সম্পদগুলি কুক্ষিগত করতে চায় এবং তার নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিতে চায়। বহু হিংসাত্মক ঘটনা, ভয় প্রদর্শন করা সত্তেও সেই সময় আমরা ইউনিয়নটি তাদের হাতে তুলে দিইনি।'রতন টাটা বলেন, তিনি যখন গ্যাংস্টারটি চাপের কাছে নতিস্বীকার না করার সিদ্ধান্ত নেন, বহু লোক মনে করেছিল তাকে আমাদের সন্তুষ্ট করা উচিত। টাটা বলেন, ‘আমি মনে করেছিলাম যে আমরা কখনওই তা করতে পারতাম না, কারণ পুলিশ-প্রশাসন তার পকেটে ছিল। সে সবাইকেই ভয় দেখিয়ে চলত।'টাটা গ্রুপের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বলেন, তিনি জানতেন যদি একবার তাকে কিছু অর্থ দেওয়া হয়, তাহলে তা চলতেই থাকবে। রতন টাটা বলেন, ' আমি জানতাম যে সে সবকিছু দখল করবে এবং আমাদের ইউনিটটিকে গ্যাংস্টার ইউনিটের মতো করেই চালনা করবে। তবুও আমি তা মোকাবিলা করতে থাকি। একদিন সে একটি ধর্মঘট ডেকে প্ল্যান্টের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। শ্রমিকরা ভয় পেয়ে চলে যায়, প্রাণ ভয়ে ফিরে আসতে চায় না।'কিন্তু এত কিছুর পরেও হাল ছাড়েননি রতন টাটা। তিনি তিনি শ্রমিকদের ভয় দূর করবার জন্য প্ল্যান্টে তিন দিন শ্রমিকদের সঙ্গে থেকে যান। যার ফলে শ্রমিকরাও আবার কাজে ফিরতে শুরু করে। গ্যাংস্টারটি বলতে থাকে প্ল্যানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, শ্রমিকরা আশ্বস্ত হয়ে কাজে ফিরে আসেন এবং প্ল্যানটি আগের মতই চলতে থাকে। রতন টাটার মতে, পুলিশের হস্তক্ষেপে পরে অভিযুক্ত গ্যাংস্টারকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর যখন সে জেল থেকে মুক্তি পায় তখন সেই গ্যাংস্টার রতন টাটাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। 'অনেকেই চেয়েছিল যে আমি তার সঙ্গে একসাথে কাজ করি, কিন্তু তা আমি কখনওই করিনি।' এভাবেই আত্মবিশ্বাস ও সততার সঙ্গে গ্যাংস্টারকে মোকাবিলা করেন রতন টাটা।