সম্প্রতি জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন ‘বীরভূমের বাঘ’ অনুব্রত মণ্ডল। আর সেই জেলখাটা ‘কেষ্ট’র সঙ্গে এবার একই মঞ্চে দেখা গেল সিএবি কর্তাদের। শুধু তাই নয়, ওই অনুষ্ঠানেই অনুব্রতকে ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়। যা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে।মঙ্গলবার বীরভূমের সিউড়িতে সিএবি-র আন্তঃজেলা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ফাইনাল ম্যাচ ছিল। সেই মঞ্চেই অনুব্রতকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিএবি প্রেসিডেন্ট তথা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাদা স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়, বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়, সিউড়ির বিধায়ক বি♋কাশ রায়চৌধুরীও।
এখানেই প্রশ্ন, সিএবি বা বীরভূম জেলা ক্রীড়া সংস্থার কোনও পদে নেই অনুব্রত। এমনকী, সরকারি কোনও পদেও নেই। তাহলে কেন তিনি ওই মঞ্চে ছিলেন বা সংবর্ধিত হলেন? এই প্রসঙ্গে সিএবি কর্তা স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘এবারের প্রতিযোগিতার আয়োজক ছিল বীরভূম। ফাইনালে আমি, সিএবি-র যুগ্ম সচিব এবং অন্যান্য কর্তারা সেখানে ছিলাম। যে অনুষ্ঠানের কথা বলা হচ্ছে, সেটা বীরভূম জেলা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের।ℱ এর সঙ্গে সিএবি-র জড়িত থাকার কোনও ব্যাপার নেই।’
উল্লেখ্য, রাজ্যের একাধিক ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের ‘ঘনিষ্ঠতা’ নতুন কিছু নয়। আসন্ন বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে নৈহাটির তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে-র হয়ে সাম্প্রতিককালে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান-মহামেডান কর্তারা প্রচার করায় বিতর্ক শুরু হয়েছিল। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া ও যুবকল্যাণমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্যকে চিঠি লিখে অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার, মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত এবং মহমেডান কর্তা কামরুদ্দিন ভিডিয়ো বার্তায় তৃণমূলের হয়ে প্রচার করায় নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে। আইএফএ-এর মতো সংস্থার সচিব কীভাবে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর সমর্থনে বার্তা দিতে পা꧂রেন, সেই প্রশ্নও তুলেছিলেন শুভেন্দু।
আর তারই মধ্যে এবার অনুব্রতকে সংবর্ধনা দেওয়ায় নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। সিএবি-র তরফে যাই দাবি করা হোক, বিরোধীরা এই বিষয়ে সোচ্চার হয়েছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্রীড়াক্ষেত্রকে বারবার রাজনীতিকরণের অভিযোগ তুলছে বাম-কংগ্রেস-বিজেপি। বঙ্গে এখন অকাল ভোটের মরশুম চলছে। তার আগে সিএবি সভাপতির সঙ্গে অনুব্রতর মতো তৃণমূল নেতার ꧂একমঞ্চে উপস্থিত থাকাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করতে পিছুপা হচ্ছে না বিরোধী দলগুলো। তবে এরকম প্রথম নয়, এর আগে বারবার ময়দান এবং রাজনীতি এক হয়ে গেছে। কিন্তু এরকম নজিরবিনহীন বিতর্ক হয়নি কোনও বার।