এই ২০২৩ সালের বিশ😼্বকাপের রোহিত শর্মা যেন ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপের সনৎ জয়সূর্য। ২৭ বছরের ফারাকে দুই ওপেনারের খেলার ধরন দেখে সেই মিলই খুঁজে পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞর🍨া। তবে শুধু রোহিত ও জয়সূর্যের ক্ষেত্রে সেই বিষয়টা সীমাবদ্ধ নেই। সার্বিকভাবে ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে যে স্টাইলে শ্রীলঙ্কা ব্যাটিং করেছিল, সেটাই যেন এবারের বিশ্বকাপের প্রথম ১০টি ম্যাচে ‘উদাহরণ’ হিসেবে ব্যবহার করেছে ভারতীয় দল। অর্থাৎ শুরুটা বিধ্বংসী করবেন ওপেনাররা। যদি ওপেনাররা রান পান, তাহলে তো কথাই নেই। অল-আউট অ্যাটাকে যাবে দল। যে কাজটা নিউজিল্যান্ডের প্রথম সেমিফাইনালেও করেছে ভারত। আর যদি তাঁরা রান করতে না পারেন, তাহলে দায়িত্ব তুলে নেবে মিডল অর্ডার। দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যাবে। যে কাজটা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্যায়ের প্রথম ম্যাচে করেছে টিম ইন্ডিয়া।
এমনি🔥তে এবার বিশ্বকাপে রোহিত যেরকম নিজের মাইলস্টোন, শতরানের পরোয়া না করে শুরু থেকেই মেরে খেলছেন, তাতে শুরুতেই চাপে পড়ে যাচ্ছেন বিপক্ষের বোলাররা। প্রথমে ব্যাট করতে নামলে রানরেট বেড়ে যাচ্ছে ভারত💞ের। ফলে পরবর্তীতে বিরাট কোহলি, শ্রেয়স আইয়াররা এসে ক্রিজে থিতু হওয়ার জন্য সময় পাচ্ছেন। তাঁদের প্রথম থেকেই মারতে হচ্ছে না। অথবা কয়েকটা ডট বল খেললে সেটা মালুম হচ্ছে না ঠিক। সেই কঠিন পরিস্থিতি সামলে নিয়ে তাঁরা পরে হাত খুলেছেন।
একইভাবে ভারত যখন রান তাড়াᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚ𒀱ᩚᩚᩚ করতে নামছে, তখন ওপেনাররা এমন শুরু করে দিয়𒅌ে যাচ্ছেন যে লক্ষ্যমাত্রা ছোটো মনে হচ্ছে। আর যখন ওপেনররা রান পাচ্ছেন না; তখন বিরাট, রাহুলের মতো খেলোয়াড়রা ইনিংসের হাল ধরছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিন রানে দু'উইকেট পড়ে যাওয়ার পর তাঁরা যেমন ভারতকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠে ছাড়েন। অর্থাৎ মূল বিষয় একটাই, ভারতীয় ওপেরনারা আক্রমণাত্মক ছন্দে শুরু করায় যেমন মিডল-অর্ডারের সুবিধা হচ্ছে, সেটা যেমন ঠিক। আবার এটাও ঠিক যে ওপেনাররা মেরে খেলতে পারছেন, কারণ তাঁরা জানেন যে মিডল-অর্ডার ব্যাটিং শক্তিশালী।
ঠিক সেটাই ছিল ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপের শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের মূল মন্ত্র। দুই ওপেনার জয়সূর্য এবং রমেশ কালুভিতারানাকে মেরে খেলার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা যে ম্যাচে সেই কাজটা করতে পেরেছিলেন, সেখান তো কোনও কথা নেই। হাসতে-হাসতে জিতে যাচ্ছিল শ্রীলঙ্কা। আর যে ম্যাচগুলিতে তাঁরা ফ্লপ হয়েছিলেন, সেই ম্যাচগুলিতে শ্রীলঙ্কার ত্🅷রাতা হয়ে দাঁড়িয়েছিল তারকাখচিত মিডল অর্ডার - আসাঙ্কা গুরুসিনহা (তিনে নামতেন), অরবিন্দ ডি'সিলভা (চারে নামতেন) এবং অর্জ⛎ুন রণতুঙ্গা (পাঁচে নামতেন)। ফাইনাল-সহ একাধিক ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে জিতিয়েছিল।
আরও পড়ুন: CWC 2023- শুধু টানা দশ ম্যাচে জয় নয়, এই র🧔েকর্ডগুলো নিজেদের দখলে রেখেই ফাইনালে নামবে ভারত
বিশ্বকাপের পরে শ্রীলঙ্কার সেই ব্যাটিং স্টাইল নিয়ে রণতুঙ্গা জানিয়েছিলেন, ১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার পরিকল্পনা সহজ ছিল। জয়সূর্য এবং ꦅরমেশকে বলা হয়েছিল যে প্রথম ১৫ ওভারে যেন ১০০ রান থেকে ১২০ রান তুলতে হবে। অর্থাৎ ওভারপিছু ছয়ের বেশি রান থাকবে। সেটা বেশ সাহসী কৌশল ছিল। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়েছিল তারকাখচিত মিডল অর্ডারের জন্য। জয়সূর্য এবং রমেশ ব্যর্থ হলেও পরিস্থতি সামাল দিতেন গুরুসিনহা, অরবিন্দ, রোশন মহানামারা। তাঁদের ছত্ﷺরছায়ার উদ্বেগহীনভাবে খেলতে পারতেন দুই ওপেনার।
১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার ম্যাচভিত্তিক ওপেনার ও মিডল-অর্ডার ব্যাটারদের অবদান
১) বনাম জিম্বাবোয়ে: ফ্লপ হয়েছিলেন দুই ওপেনারই। ১১ বলে ছয় রান করেছিলেন জয়সূর্য। প্রথম বলেই আউট হয়ে গিয়েছিলেন রমেশ। নিজেদের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন গুরুসিনহা (৮৭ রান) এবং অরবিন্দ (৯১ রান)। তাঁদের সৌজন্যে ৭৮ বল বাকি থাকতেই ২২৯ রান তাড়া করে ফে♋লেছিল শ্রীলঙ্কা। জিতেছিল ছয় উইকেটে।
২) বনাম ভারত: ২৭২ রানের টার্গেট দিয়েছিল ভারত। সেইসময় সেটা বেশ ভালো টার্গেট। আর সেই রান তাড়া করতে নেমে মেরে খেলতে শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কা। ৭৬ বলে ৭৯ রান করেছিলেন জয়সূর্য। ১৬ বলে ২৬ রান করেছিলেন রমেশ। সেদিন গুরুসিনহা বা অরবিন্দ রান না পেলেও রণতুঙ্গা (অপরাজিত ৪৬ রান) এবং হাশান🦄 তিলকরত্নে (অপরাজিত ৭০ রান) শ্রীলঙ্কাকে ছয় উইকেটে জ🌠িতিয়ে দিয়েছিল।
৩) বনাম কেনিয়া: প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে পাঁচ উইকেটে ৩🧜৯৮ রান তুলেছিল শ্রীলঙ্কা। শুরুটা বিধ্বংসী ছন্দে করেছ𒈔িলেন দুই ওপেনার। ২৭ বলে ৪৪ রান করেছিলেন জয়সূর্য। ১৮ বলে ৩৩ রান করেছিলেন রমেশ। রান পেয়েছিলেন গুরসিনহা (৮৪ রান), অরবিন্দ (১১৫ বলে ১৪৫ রান), রণতুঙ্গারাও (৪০ বলে অপরাজিত ৭৫ রান)।
৪) কোয়ার্টার-ফাইনাল (বনাম ইংল্যা🍰ন্ড): ২৩৬ রানের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল ইংল্যান্ড। আর ব্যাট করতে নেমে কার্যত ছেলেখেꦚলা করেছিলেন জয়সূর্য। তিন বলে আট রান করে রমেশ আউট হয়ে গেলেও ৪৪ বলে ৮২ রান করেছিলেন জয়সূর্য। স্ট্রাইক রেট ছিল ১৮৬.৩৬। তারপর বাকি কাজটা করে দিয়েছিল মিডল-অর্ডার। ৫৬ বল বাকি থাকতে পাঁচ উইকেটে জিতেছিল শ্রীলঙ্কা।
৫) সেমিফাইনাল (বনাম ভারত): ভারতের বিরুদ্ধে ফ্লপ হয়েছিলেন দুই ওপেনারই। তিন বলে এক রান করেছিলেন জয়সূর্য। প্রথম বলেই ড্রেসিংরুমে ফিরেছিলেন রমেশ। রান পাননি গুরুসিনহাও। সেদিন অরবিন্দ (৬৬ রান), রোশন মহানামা (৫৮ রান), রণতুঙ্গা (৩৫ রান), হাশানরা (৩২ রান) শ্রীলঙ্কার স্কোর আট উইকেটে ২৫১ রানে নিয়ে গিয়েছিলেন। অর্থাৎ ওপℱেনারদের ব্যর্থতার দিনে শ্রীলঙ্কাকে বাঁচিয়েছিল মিডল-অ♏র্ডার এবং লোয়ার-মিডল অর্ডার।
৬) ফাইনাল (বনাম অস্ট্রেলিয়া): র🌸ান পাননি 𒀰দুই ওপেনারই। সাত বলে নয় রান করেছিলেন জয়সূর্য। ১৩ বলে ছয় রান করেছিলেন রমেশ। ২৩ রানে দুই উইকেট হারানোর পর গুরুসিনহা এবং অরবিন্দ শ্রীলঙ্কার ইনিংস টেনেছিলেন। ৬৫ রান করেছিলেন গুরুসিনহা। ১০৭ রানে অপরাজিত ছিলেন অরবিন্দ। ৪৭ রানে অপরাজিত ছিলেন রণতুঙ্গা। বিশ্বকাপ জিতেছিল শ্রীলঙ্কা।