আমতার ছাত্র নেতা আনিস খানের মৃত্যুর এক বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তারই মধ্যে চলে এসেছে পঞ্চায়েত ভোট। আনিসের দাদা সামসুদ্দিন খানকে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী করেছে সিপিআইএম। কুশবেড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির ৪২ নম্বর আসন থেকে ভোটে লড়বেন তিনি। তবে এই লড়াইটা শুধু আনিসের দাদার একার নয়। এই লড়াইয়ের সামিল হয়েছেন সন্তানহারা পিতা তথা আনিসেরে বাবা সালেম খান। তিনি মনে করেন, তৃণমূলের বিরোধিতা করার জন্যই খুন হতে হয়েছিল তাঁর ছেলেকে। তাই এই লড়াইটা তার কাছে শুধু তৃণমূলের বিরুদ্ধে জয়ের জন্য লড়াই নয়, এই লড়াইটা ছেলের মৃত্যুর বিচারের লড়াই। তাই ছেলের মৃত্যুর বিচার চাইতে দেওয়াল লিখনের কাজে হাত লাগানোর পাশাপাশি জনতার দরবারে আনিসের বাবা সালেম খান। তৃণমূলকে হারাতে তিনি বদ্ধপরিকর।সালেম বলেন, ‘আমার ছেলে তৃণমূলের বিরোধিতা করেছিল। সেই কারণে পুলিশ পাঠিয়ে তাঁকে খুন করা হয়েছিল। আমার এই লড়াই হল তৃণমূলকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য লড়াই।’ কুশবেড়িয়া পঞ্চায়েতে ১৪টি আসন রয়েছে। এর আগে বিদায়ী বোর্ডের সব কটি আসন ছিল তৃণমূলের দখলে। তবে আনিসের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরেই সেখানে সক্রিয় হয়ে উঠেছে সিপিএম, কংগ্রেস এবং আইএসএফ। এই তিনটি দল এবার একজোট হয়েছে সেখানে লড়ছে। সব মিলিয়ে ১৪ টি আসনের মধ্যে ১৩ টিতে প্রার্থী দিয়েছে সিপিএম এবং একটিতে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। তবে আইএসএফ কোনও প্রার্থী না দিলেও তারা জোটের সঙ্গে আছেন বলে জানিয়েছেন সালিম।আনিসের দাদার পাশাপাশি এবার ভোটে প্রার্থী হয়েছে তাঁর মামা সাবির খান। ১০০ নম্বর বুথে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। যদিও সালেমকে প্রার্থী করতে চেয়েছিল সিপিএম। তবে তিনি প্রার্থী হতে রাজি হননি। তাঁর কথায়, ‘আমি প্রার্থী হলে বাকি লড়াই কে লড়বে।’ আনিসের বাবার মতোই পুলিশ পাঠিয়ে তাঁকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলেছেন সিপিএমের হাওড়া জেলা সম্পাদক দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি তৃণমূলের পুলিশই আনিসকে খুন করেছে। সালেমের সঙ্গে লড়াইয়ে আমরা পাশে আছি।’ কংগ্রেস নেতা অসিত মিত্রও একই কথা জানিয়েছেন।প্রসঙ্গত, এই পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান হাসেম খানের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন আনিস। এবার তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন তিনি। তবে হুমকির ঘটনায় তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেছেন। তাঁর আশা নির্বাচনে তিনি জয়ী হবেন। উল্লেখ্য, গতবছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছিল আনিসের। তাঁর বাড়িতে পুলিশ গিয়েছিল। সেই সময় তিনতলা থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে তোলপাড় হয়ে উঠেছিল রাজ্য রাজনীতি।